বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
spot_img
Homeজাতীয়নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে অন্তত ৫২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে অন্তত ৫২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইলের কর্ণগোপ এলাকায় সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস লিমিটেডের মাত্র ৫০ গজ দূরেই টিনশেড ঘরে থাকেন আমেনা ও তার পরিবার।

ঘরের পেছনের জরাজীর্ণ কাঠের দুয়ার খুললেই কারখানার ধোঁয়াও তাদের নাকে আসে। মেয়ে ও মা ওই কারখানারই শ্রমিক ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতের শিফটে কাজ থাকায় বেঁচে গেছেন আমেনা।

কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলার কথা তুলে ধরে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাইলেন সন্তানহারা এই মা। গতকাল আমেনার ছোট্ট ঘরে চলছিল মাতম।

মেয়ের ছবি প্রতিবেশীদের দেখিয়ে মা বলছিলেন, ‘ছুটি অইলে ঈদের আগে সবাই গ্রামে যাওনের কথা ছিল। আমার মায়ের এই ছুটি অইল..

হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে অন্তত ৫২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আহত হন অর্ধশতাধিক। গতকাল শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ভবনটির প্রথম থেকে ষষ্ঠতলা পর্যন্ত তল্লাশি করে ৪৯ জনের মরদেহ পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

উদ্ধার অধিকাংশের লাশ পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। নারী-পুরুষের পার্থক্যও বোঝা যাচ্ছে না। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগার পরপরই প্রাণ বাঁচাতে লাফিয়ে পড়ে তিন শ্রমিক নিহত হন।

তখনও বোঝা যায়নি লাশের সারি এত দীর্ঘ হবে সিআইডি বলছে, দাঁত ও হাড়ের মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ শনাক্ত করতে অন্তত ২১ দিন লাগবে।

গতকাল রাতে ৪৮টি লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গতকাল পর্যন্ত ২৬ স্বজনের ডিএনএ স্যাম্পলও নেয় সিআইডি।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসাইন সমকালকে বলেন, আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তদন্ত কমিটি এটা বের করবে।

ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দেবাশীষ বর্ধন ঘটনাস্থলে  বলেন, ছয়তলা ভবনের ছাদে ওঠার জন্য দুটি সিঁড়ি রয়েছে, যার একটির ছাদের দরজা বন্ধ ছিল। অন্য সিঁড়ি দিয়ে ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন কিছু কর্মী।

সেখান থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকিরাও যদি ছাদে উঠতে পারতেন, তাদেরও বাঁচানো যেত। চতুর্থ তলা থেকে ছাদে যাওয়ার সিঁড়ি তালাবদ্ধ ছিল।

আর নিচের দিকে সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে ছিল আগুন। তারা নিচে নামতে পারেননি, আবার সিঁড়ির দরজায় তালা থাকায় ছাদেও উঠতে পারেননি।

কারখানায় আগুনে প্রাণ ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। শুক্রবার পৃথক বার্তায় তারা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

 

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ