শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪
spot_img
Homeপ্রধান সংবাদমামুনুলের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা

মামুনুলের বিরুদ্ধে আরও দুই মামলা

পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আরও ৬শ’ জনকে ‘অজ্ঞাতনামা’ হিসেবে আসামি করা হয়।

বুধবার (০৭ এপ্রিল) পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করে।

এর আগে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে দেশে সহিংসতার ঘটনায় সারা দেশে মোট ২৫টি মামলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার জন্য হেফাজতকে দায়ী করা হলেও মামলাগুলোতে সংগঠনটির নেতাদের নাম দেওয়া হয়নি।

তবে গত ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

বারবার হেফাজত নেতাদের সরকার ছাড় দিলেও এই দফায় যে আর ছাড় পাচ্ছেন না সে আভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে এবার আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়াল রিসোর্টে মামুনুল হককে এক নারীসহ অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীরা। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।

হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জে এক নারীসহ অবরুদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ ঘটনার তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ চলছে। তদন্ত করা হচ্ছে। হেফাজত নেতারা মামুনুল হককে সমর্থন দিলেও আমরা যে তথ্য পাচ্ছি তাতে তিনি অনেক জঘন্য অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ইসলাম ধর্মে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, সহিংসতার ব্যাপারে সরকার কোনো ছাড় দেবে না। তারা যে কর্মকাণ্ড করেছে, সেটা মোকাবিলা করতে হলে শত শত মানুষকে গুলির মুখে ফেলতে হতো। কিন্তু সেটা সরকার করেনি। সরকার ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। সারা জাতি দেখেছে এবং সারা পৃথিবীর মানুষ দেখেছে যে, ধর্মান্ধরা কী করতে পারে। এবার সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, যারা এ ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল, তাদের সবাইকে আইন অনুযায়ী কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তারা কোনোক্রমেই রেহাই পাবে না।

এসব অভিযোগে সরকার এখন মামুনুল হক এবং হেফাজতের নেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কথা থেকেও সে ধারণা পাওয়া গেছে।

মাওলানা মামুনুল হকের সাম্প্রতিক ঘটনা প্রসঙ্গে গত ৪ এপ্রিল সংসদে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, ‘মামুনুল যে নারীকে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি পার্লারের কর্মী। একদিকে বউ হিসেবে পরিচয় দেয়, আবার নিজের বউয়ের কাছে বলে যে, অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এটি বলে ফেলেছি। যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে, এ রকম মিথ্যা কথা, অসত্য কথা কি তারা বলতে পারে? এরা ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করে বলে আজ ইসলাম হুমকির মধ্যে। এরা আসলে ধর্ম ব্যবসায়ী। এদের ছাড় দেয়া হবে না। যারাই ধর্মের নামে অধর্মের কাজ করবে, তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

একই দিন এই বিষয়ে মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামুনুলের বিষয়ে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ওই নারী তার স্ত্রী নন।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ওই ঘটনার পর দেখলাম ওই রিসোর্টের ওপর আক্রমণ। কেন এই আক্রমণ আমার জানা নেই। সেখানে কয়েকজন বিদেশি ছিলেন। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে তাদের রক্ষা করেছে।’

হেফাজতের তাণ্ডব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে এই ধরনের তাণ্ডব কেন, নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারাই তাণ্ডব করে থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি।’

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ