মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে অগ্নিকান্ড ও পানিতে ডুবে ২শিশুসহ ৩জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলো-জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার আমরোজ মিয়া (৫০), মায়মনা আক্তার (৬) ও রায়হান মিয়া (২)।
আজ সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে পৃথক ভাবে ৩জনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল রবিবার (২৩ জুলাই) রাত ২টায় জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার চিকারকান্দি গ্রামের হাজী বাড়ির তারিছ মিয়ার টিনের ঘরে হঠাৎ আগুন লাগে।
পরে সেই আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় লোহার দা দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে আমরোজ মিয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে আগুনে পড়ে যায়। পরে তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাত
সাড়ে ৩টায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।
আজ সোমবার (২৪ জুলাই) ভোরে বৃদ্ধ আরমোজ মিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। অন্যদিকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রায় ২ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এঘটনায় ৯টি
বসতবাড়ি ও বাড়ির ভিতরে থাকা ৮শত মন আমন ধান, অধশতাধিক হাঁস-মুরগিসহ কয়েকটি গবাদিপশু আগুনে পুড়ে যাওয়ায় প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে এদিন সন্ধ্যায় একই উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের
চন্দ্রপুর নোয়াবাড়ি গ্রামের সামনে অবস্থিত বাঁশের সাকো দিয়ে খাল পাড় হাওয়ার সময় মায়মনা আক্তার পানিতে পড়ে ডুবে নিখোঁজ হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজি করে ৩ ঘন্টার পর রাত ৯টায় খালের পানি থেকে ওই শিশুকন্যার মৃতদেহ
উদ্ধার করে এলাকাবাসী। অপরদিকে জয়কলস ইউনিয়নের সড়কহাটি গ্রামে পরিবারের লোকজনের অগোচরে নিজ বসতবাড়ির পুকুরে পড়ে ডুবে নিখোঁজ হয়ে যায় শিশু রায়হান মিয়া। প্রায় ঘন্টাখানেক পর ওই শিশুর মৃতদেহ পুকুরের
পানিতে ভেসে উঠলে উদ্ধার করা হয়। পৃথক ভাবে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এদিকে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আহাদ মিয়া ও রিপন মিয়া বলেন- আগুনে পুড়ে আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় থাকব, কি খেয়ে বাঁচব।
তাদের লেখাপড়াই বা কিভাবে করাব। এব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনোয়ার উজ-জামান বলেন- অগ্নিকান্ডের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যিনি মারা গেছেন, তার পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
এছাড়া যাদেব বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে চাল ও শুকনা খাবারসহ আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করা হবে।
ওসি মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী জানান- পৃথক ভাবে ২ শিশুর মৃত্যুর পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানায় পৃথক ২টি
অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। শিশুদের জীবন রক্ষার্থে পরিবারের সদস্যদেরকে সচেতন হবে। তাহলে এধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে।