শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
spot_img
Homeআইন-অপরাধতাহিরপুর সীমান্তে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে ওরা কোটিপতি: রাজস্ব বি ত সরকার

তাহিরপুর সীমান্তে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে ওরা কোটিপতি: রাজস্ব বি ত সরকার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার বহুল আলোচিত তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে সরকারের কোটিকোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারত থেকে কয়লা, চুনাপাথর, চিনি, সুপারী, কমলা, গরু, ছাগল, মহিষ, ঘোড়া, কমলা, পেয়াজসহ মদ, গাঁজা, ইয়াবা, নাসির উদ্দিন বিড়ি, মোটর সাইকেল, কসমেটিকস ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর এবং পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম

ভাংগিয়ে চাঁদাবাজি করে সীমান্ত গডফাদার ও তার সোর্সরা হয়েগেছে কোটিপতি। অন্যদিকে এই সীমান্তে অবস্থিত ৩ শুল্কস্টেশনের প্রায় ৩হাজার বৈধ ব্যবসায়ীরা তাদের কারণে হয়েছে সীমাহীন ক্ষতিগ্রস্থ্য। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি জোড়ালো কোন পদক্ষেপ। তাই সংশ্লিস্ট প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা। এলাকাবাসী ও

শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিন ভোর থেকে জেলার তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের সুন্দরবন, লামাকাটা, পাশের চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা ও লালঘাট, বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট, লাকমা, টেকেরঘাট সীমান্তের চুনাপাথর খনি প্রকল্প, বড়ছড়া, বুরুঙ্গাছড়া, রজনীলাইন, চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া, গারোঘাট, রাজাই, কড়ইগড়া, বারেকটিলা ও লাউড়গড়

সীমান্তের যাদুকাটা নদী, সাহিদাবাদ, দশঘর, পুরান লাউড় এলাকা দিয়ে চোরাকারবারীদের গডফাদার তোতলা আজাদের নেতৃত্বে তার সোর্স বাহিনীর সদস্য একাধিক মামলার আসামী আইনাল মিয়া, রিপন মিয়া, সাইফুল মিয়া, রফ মিয়া, বাবুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, শামসুল মিয়া, শরাফত আলী, লেংড়া জামাল, সোহেল মিয়া, ইয়াবা কালাম মিয়া, হোসেন আলী, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া,

ইসাক মিয়া, কামাল মিয়া, আক্কল আলী, আবু বক্কর, জামাল মিয়া, রফিকুল, বায়েজিদ মিয়া, জসিম মিয়াগং পৃথক ভাবে কয়লা, চুনাপাথর, ইয়াবা, মদ, গাঁজা, মোটর সাইকেল, নাসিরউদ্দিন বিড়ি, চিনি, সুপারী, গরু, ছাগল, মহিষ, ঘোড়া, কমলা, পেয়াজ, কসমেটিকস ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করার পর সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নামে উত্তোলন করা হয় লাখলাখ টাকা চাঁদা।

এব্যাপারে সীমান্তের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া, জিয়াউর রহমান, খাইরুল মিয়া, আলী হোসেন, শফিকুল ইসলাম, হবি রহমান, মিলন মিয়া, জামাল মিয়া, সবুজ মিয়া ও সিদ্দিক মিয়াসহ আরো অনেকে জানান- চাঁনপুর ও টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত এক বস্তা (৫০ কেজি) কয়লা থেকে বিজিবিকে ৫০টাকা এবং পুলিশ ও সাংবাদিকের নামে ১ নৌকা (১৫ টন) থেকে ২০হাজার টাকা করে চাঁদা নেয় সোর্স আক্কল আলী,

কামাল মিয়া ও ইসাক মিয়া। অন্যদিকে বালিয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত ১বস্তা কয়লা থেকে টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির নামে ৩০টাকা, তোতলা আজাদ ও রাজ্জাকের নামে ২০টাকা, বিজিবি ক্যাম্পের নামে ৭০টাকাসহ মোট ১৫০টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, ইয়াবা কালাম, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া। পাশের চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত ১ বস্তা কয়লা থেকে প্রথমে বিজিবির নামে

৫০টাকা, তারপর আবার ১টন হিসেবে পুলিশ ও সাংবাদিকদের নামে ১২শ টাকা, বিজিরি নামে ৮শ টাকা, কয়লা আমদানী কারক সমিতির নামে সভাপতি হাসান আলীর নামে ৫শ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, আইনাল মিয়া ও রিপন মিয়া। একই ভাবে বীরেন্দ্রনগর ও লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত কয়লা থেকে চাঁদা উত্তোলন করে লেংড়া জামাল, বায়েজিদ মিয়া ও জসিম মিয়া। আর অন্যান্য মালামাল পাচাঁর

করার হয় চুক্তি ভিত্তিক আলোচনা সাপেক্ষে। এব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রাশিদ মিয়া ও বৈধ কয়লা ব্যবসায়ী ফজলু সরদার বলেন- তোতলা আজাদ ও তার সোর্স বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ করছে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি। তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে আমরা বৈধ ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছি। লালঘাট গ্রামের চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী খোকন মিয়া বলেন- তোতলা আজাদ মিয়া

সীমান্তে সোর্স বাহিনী তৈরি করে গত ২বছরে ১০কোটি টাকার মালিক হয়েছে। তার কথা মতো চোরাচালান ও চাঁদাবাজি না করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয়। বড়ছড়া কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির আন্তর্জাতিক বিয়ষক সম্পাদক আবুল খায়ের বলেন- সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য স্থানীয় প্রশাসের কাছে বারবার বলার পরও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়না, তাই এব্যাপারে প্রশাসনের উপর কর্মকর্তাদের

সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন। এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার বিল্লাল বলেন- আমি এই ক্যাম্পে আসার পর রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে কয়লা পাচাঁর বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের ক্যাম্পের কোন সোর্স নাই। তাহিরপুর থানার ওসি কাজী নাজিম উদ্দিন বলেন- আমাদের থানা-পুলিশের কোন সোর্স নাই। তবে সীমান্ত

চোরাচালান বন্ধ করার দায়িত্ব বিজিবির। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি কমান্ডার মাহবুবুর রহমানের সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পরও রিসিভ না করার কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ