সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে পাচাঁরকৃত পেয়াজের চালান বোঝাই ট্রাকসহ ৫ চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু সীমান্ত চোরাকারবারীদের গডফাদার রয়েগেছে বহাল তবিয়তে।
তাকে গ্রেফতার না করার কারণে সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি দিনদিন বেড়েই চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাই এব্যাপারে প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে- প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পৃথক ভাবে জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারী বায়েজিদ মিয়া, জসিম মিয়া, রফিক মিয়া, এরশাদ মিয়া,
নাজিম মিয়া, চাঁনপুর সীমান্তে আবু বক্কর, আলমগীর, জম্মত আলী, রফিকুল, সাহিবুর রহমান, টেকেরঘাট সীমান্তে আক্কল আলী, কামাল মিয়া, মোক্তার মহলদার, বালিয়াঘাট সীমান্তে জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া,
ইয়াবা কালাম মিয়া, নেকবর আলী, বাবুল মিয়া, হোসেন আলী, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, চারাগাঁও সীমান্তে শামসুল মিয়া, শরাফত আলী, সুলতান মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, সোহেল মিয়া, বাবুল মিয়া, রফ
মিয়া, আইনাল মিয়া, রিপন মিয়া, সাইফুল মিয়া, হযরত আলী ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে লেংড়া জামাল, গোলাম মস্তোফাগংকে দিয়ে গডফাদার তোতলা আজাদ ভারত থেকে অবাধে কয়লা, চুনাপাথর, চিনি, সুপারী, পেয়াজ,
নাসির উদ্দিন বিড়ি, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, গরু, ঘোড়া, মোটর সাইকেল ও অস্ত্র পাচাঁর করে। পরে অবৈধ মালামাল থেকে সংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে প্রতিদিন লাখলাখ টাকা উত্তোলন করে গডফাদার তোতালা আজাদ।
এছাড়াও যাদুকাটা নদীর তীর কেটে ও নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় অর্ধশতাধিক বালি ও পাথর কোয়ারী (মৃত কূপ) তৈরি করে সোর্স আলীম উদ্দিনকে দিয়ে সাংবাদিক ও পুলিশের নামে প্রতিদিন দেড় লাখ টাকা চাঁদা
উত্তোলন করে গডফাদার তোতলা আজাদ। তার নিজ গ্রাম কামড়াবন্দসহ জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, লামাকাটা, সুন্দরবন, বাঁশতলা, লালঘাট, লাকমা, বড়ছড়া, লাউড়গড়, বারেকটিলা, শ্রীপুর বাজার ও দুধের আউটাসহ আরো
একাধিক স্পটে গডফাদার তোতলার নেতৃত্বে ইয়াবা ও মদ বিক্রি করা হয়। সরকারের কোটিকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে গত ৩বছরে ওই গডফাদার ১৫কোটি টাকার মালিক হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যার পর থেকে গডফাদার তোতলা ও তার সোর্স বাহিনীর সদস্যরা সীমান্ত দিয়ে পৃথক ভাবে ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করে ওই গডফাদার তার কামড়াবন্দ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়াসহ নদী ও সড়ক পথে দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌকা ও ট্রাক বোঝাই করে পাঠানো শুরু করে।
এমতাবস্থায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওইদিন রাত পৌনে ১০টায় বাদাঘাট-তাহিরপুর সড়কের হুসনা এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪লাখ ৮হাজার টাকা মূল্যের ৪হাজার ৮শ কেজি পেয়াজ ভর্তি ১টি ট্রাকসহ সীমান্তের বিশিস্ট চোরাকারবারী সাহিবুর রহমান (৪২) ও তার সহযোগী বাবুল মিয়া (৫০) কে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
ওই সময় পালসার মোটর সাইকেল নিয়ে গডফাদার তোতলা আজাদ সুকৌশলে পালিয়ে যায়। এরআগে এদিন দুপুরে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর আব্দুস জহুর টোলবক্সের সামনে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৬৪০ কেজি অবৈধ পেয়াজ বোঝাই ১টি ট্রাকসহ চোরাকারবারী সেলন মিয়া (৪০), মঈনুল ইসলাম (৩৮) ও আনফর আলী (২৫) গ্রেফতার করা হয়।
পরে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এঘটনার প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) রাতে সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করা হয়। সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই পলাশ চৌধুরী ও তাহিরপুর থানার ওসি নাজিম উদ্দিন পৃথক অভিযানে ৫জনের গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- চোরাচালান প্রতিরোধে এঅভিযান অব্যাহত থাকবে।