শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
spot_img
Homeপ্রধান সংবাদতাহিরপুর সীমান্তে নদীর তীর কাটাসহ চোরাচালান জমজমাট: গ্রেফতার ৪২

তাহিরপুর সীমান্তে নদীর তীর কাটাসহ চোরাচালান জমজমাট: গ্রেফতার ৪২

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা ও মাহারাম নদীসহ আরো একাধিক সীমান্ত নদী তীর কেটে বালি বিক্রি ও ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা, পাথর, কাঠ, চিনি, সুপারী ও গরু, ছাগলসহ মদ, গাঁজা, ইয়াবা পাঁচার করছে চোরাকারবারীরা।

সরকারের লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত এসব অবৈধ বাণিজ্য করে ইতিমধ্যে অনেকেই হয়েগেছে কোটিপতি। এসব নানান অনিয়ম নিয়ে গত বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলার বঙ্গবন্ধু

কনফারেন্স হল রুমে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের তুপের মুখে পড়েন ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।

এনিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও বিভাগীয় দৈনিক পত্রিকাসহ অনলাইনে “তাহিরপুরে বির্তকিত কর্মকান্ডে তোপের মুখে ওসি” সহ নানান শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর গত কয়েকদিন যাবত পুরো জেলা জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

এমতাবস্থায় গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে পরদিন শুক্রবার (১৪ জুলাই) ভোর পর্যন্ত সীমান্তের যাদুকাটা নদীতে পৃথক অভিযান চালিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলনকারী গডফাদার তোতলা আজাদের ৪২জন সহযোগীকে গ্রেফতার করাসহ তাদের ১০টি ড্রেজার ও ৩টি বাল্কহেড নৌকা জব্দ করে পুলিশ।

কিন্তু মূল হোতা রয়েছে ধরাছোয়ার বাহিরে। এলাকাবাসী জানায়- তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত নদী যাদুকাটা ও মাহারামসহ একাধিক নদীর তীর কাটাসহ ও উপজেলার বীরেন্দ্রনগর, চাঁরাগাঁও, বালিয়াঘাট, টেকেরঘাট, চাঁনপুর ও

লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে পৃথক ভাবে কয়লা, পাথর, চিনি ও সুপারীসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাঁচার শুরু করে গডফাদার তোতলা আজাদের সোর্স একাধিক মামলার আসামী ইয়াবা কালাম, রফ মিয়া, রিপন মিয়া, সাইফুল মিয়া,

লেংড়া জামাল, আনোয়ার হোসেন বাবলু, সুলতান মিয়া, খোকন মিয়া, রুবেল মিয়া, আদম আলী, সরাফত আলী মানিক মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, মনির মিয়া, নেকবর আলী, রতন মহলদার, কামরুল মিয়া, কামাল মিয়া, আবু বক্করগং।

এরপর পাচাঁরকৃত মালামালের মধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত নাসিরউদ্দিন বিড়ি, গাঁজা ও মদসহ ইয়াবা নিয়ে বাদাঘাট বাজার, কামড়াবন্দ, বারহাল, শিমুলতলা, কাউকান্দি, তরং বাজার, নতুন বাজার, আনোয়ারপুর, বালিজুরী, জনতা বাজার, একতা বাজার, সোলেমানপুর বাজার ও তাহিরপুর পশ্চিম বাজারে বিক্রি করা হলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।

এব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের ইউপি মেম্মার ধন মিয়া, লালঘাটের জিয়াউর রহমান, চারাগাঁও এর বাবুল মিয়া, মোফাজ্জল হোসেন, সাইদুল মিয়া বলেন- তোতলা আজাদ তার সোর্সদেরকে দিয়ে পাচাঁরকৃত ১টন

চোরাই কয়লা থেকে তাহিরপুর থানার নামে ২হাজার টাকা, টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের নামে ১বস্তা (৪০ কেজি) থেকে ৭০টাকা, বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে প্রতি নৌকা (২০টন) ৮হাজার টাকা ও চারাগাঁও ক্যাম্পের নামে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা তুলে তার কামড়বন্দ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে ভাগভাটোয়ারা করে।

তাহিরপুরের বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন ও বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজাদ হোসাইন বর্তমান ওসিকে অযোগ্য দাবি করে বলেন- দিনে ও রাতে প্রকাশ্যে যাদুকাটা নদীর তীর কেটে প্রতিদিন বালি

উত্তোলন করা হচ্ছে। অন্য ওসিরা এই থানার দায়িত্ব থাকাকালীন সময় এমন ঘটনা কখনোই ঘটেনি। এতে প্রমানিত হয় এসব অন্যায়ের সাথে ওসি জড়িত।

তাহিরপুর উপজেলার আওয়ামীললীগের সভাপতি আবুল হোসেন খান বলেন- রাতের আঁধারে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন কালে দারোগারা ব্যাগ হাতে নিয়ে টাকা তুলেন। পুলিশ ওই সিন্ডিকেডের সাথে জড়িত না থাকলে কখনোই এসব অন্যায় করা সম্ভব হতো না।

এসব অভিযোগের বিষয় নিয়ে তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন সাংবাদিকদের জানান- আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগ নেতারা তাকে জড়িয়ে যেসব কথা বলেছে তা সঠিক নয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে অবৈধ ড্রেজার, বালি বোঝাই নৌকাসহ ৪২জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ