মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালী প্রতিনিধি, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র পরাজিত প্রার্থীর এজেন্ট শাহেদুজ্জামান প্রকাশ পলাশ (৩৫) নামের কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের মনসুর আলী বেপারী বাড়ির হাজী আবুল কাসেমের ছেলে আহছান উল্যা প্রকাশ কল্লা হাসান (৩৮) একই ইউনিয়নের অজি উল্যার ছেলে মোঃ আকবর
হোসনে প্রকাশ সোহেল (৩৬) ও নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের পুর্ব মির্জানগর গ্রামের অজি বাড়ির নুরনবীর ছেলে মোঃ মিরাজ (২১)। রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাতে উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে
অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার বাদী হয়ে রোববার রাতে অজ্ঞাত নামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মির্জানগর গ্রামে ওই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। অজ্ঞাত দৃুবৃত্তরা পলাশকে কপাল ও মুখে ধারালো অস্ত্রের
আঘাতকরে হত্যা করেছে। নিহত শাহেদুজ্জামান প্রকাশ পলাশ (৩৫) পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মোঃ জামাল উদ্দিনের ছেলে।
খবর পেয়ে ওইদিন শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় এবং রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে।
তবে কে বা কারা শাহেদুজ্জামানকে খুন করেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বিগত ৭জানুয়ারী অনূষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে (কাঁচি মার্কার) স্বতন্ত্র প্রার্থী বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশ (বাফুক)সহ-সভাপতি
ও নোয়াখালী জেলা আওযামীলীগের সাবেক সহসভাপতি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক অভিযোগ করে বলেন, নিহত শাহেদুজ্জামান প্রকাশ পলাশ পূর্ব মির্জানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তার কাঁচি প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিলেন । ভোটেরদিন ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদ করে সে।
এই নিয়ে স্থানীয় নৌকা প্রতীকের বিজয়ী মোরশেদ আলম এমপির সমর্থকরা শাহেদুজ্জামানকে নানা হুমকি দিয়ে আসছিলো। ওই ঘটনার জেরে তাঁকে হত্যা করা হতে পারে বলে তাঁর ধারণা। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে নৌকা প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম বলেন, তিনি গত ১০ বছর নোয়খালী-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। দীর্ঘ এই সময়ে এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা হত্যাকা- ঘটেনি।
নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচারে নেমেছেন। তবে হত্যাকা-ের বিষয়টি জানার পর তিনি তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান।
সোনাইমুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার ভিকটিম মৃত শহিদুজ্জামান পলাশের মৃত্যুর আগে ও পরের সময়ে আসামীগণ ঘটনাস্থলে অবস্থান করার বিষয়টি স্বীকার করে। আসামীরা তাদের অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের সহায়তায় পরস্পর
যোগসাজাসসে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ভিকটিমকে হত্যা করে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় । গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হইয়াছে। মামলায় ঘটনায় জড়িত অপরাপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।