বশির আলম,গাজীপুরের টঙ্গীতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে গড়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অবৈধ অটোরিকশা তৈরির শতাধিক কারখানা। এ ছাড়া গাড়ি মেরামতের ওয়ার্কশপগুলোতেও তৈরি হচ্ছে অবৈধ এসব যান।
রাত-দিন এসব কারখানায় তৈরি হচ্ছে অটোরিকশা, টঙ্গীর চেরাগআলী বেক্সিমকো রোডে বেশিরভাগ কারখানাগুলোর শোরুম রয়েছে। এখানে শুধু অবৈধ অটোরিকশা তৈরি করে থাকে না পুরাতন ব্যাটারি ক্রয় করে এগুলোকে আবার নতুন করে অবৈধ উপায়ে মেরামত করে বাজার নতুন ব্যাটারি হিসেবে বিক্রি করে থাকে।
এছাড়া টঙ্গীর বিভিন্ন অলি গলিতে ছড়িয়ে পড়ছে নিষিদ্ধ এসব যান। জানা গেছে, অটোরিকশা তৈরিতে সরকারের কোনো ধরনের বৈধতা না থাকলেও অটোরিকশা কারখানার বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কোনো আইনি পদক্ষেপ নেই। এতে দিনের পর দিন বেড়েই চলছে অটোরিকশা।
বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানি। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় একটি মহল অবাধে তৈরি করছে এসব যান। তবে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, অবৈধ এসব কারখানা নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগ নেওয়া
হচ্ছে; পাশাপাশি অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায় টঙ্গী চেরাগ আলী এলাকার আল – মদিনা অটোরিকশা কারখানার মালিক আব্দুল্লাহ হুজুর এক সময় ফুটপাতে সবজি বিক্রি
করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, বর্তমানে অবৈধ অটো রিক্সার ব্যবসা করে কোটিপতি বনে গেছেন, লোকমুখে চাউর আছে তিনি বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতির অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষতা করে থাকেন।
চেরাগআলীতে অবৈধ অটো ওব্যাটারি ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন একাধিক প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে অন্যতম রয়েছেন, শাকিল অটো ভিশন ব্যাটারি হাউজ, আমিন ইঞ্জিনিয়ারিং, বিসমিল্লাহ ব্যাটারি হাউজ,আল মদিনা, ভাই
ভাই ব্যাটারী হাউজ,ডিজিটাল সাইকেল স্টোর, সৌরভ ব্যাটারি হাউজ,নিউ মুক্তি এন্টারপ্রাইজ, আল -মাহাদী এন্টারপ্রাইজ, নাফিজ এন্টারপ্রাইজ, জাপান ব্যাটারি হাউজ, মেসার্স তাওহীদ ব্যাটারি হাউজ, মুদাফা খলিল
মার্কেট মাইনউদ্দিন এন্টারপ্রাইজ, মাসুদ এন্টারপ্রাইজ, আল মদিনা এন্টারপ্রাইজের বিশাল একটি কারখানার রয়েছে বড় দেওড়া চন্ডীতলা যার স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ হুজুর, এছাড়াও কাঠালদিয়া শাকিল এন্টারপ্রাইজ সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো কারখানা রয়েছে।
গাজীপুরা সাতাইশ এলাকায় বেশ কিছু কারখানা রয়েছে এছাড়াও খাপাড়া, এরশাদ নগর, দত্তপাড়া টিএনটি, মরকুন , আরিচপুর, জামাই বাজার,বিসিক পাগার, বউবাজার টঙ্গীর মধুমিতা সহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এসব অবৈধ অটো রিক্সার কারখানা।
স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, এখনই সময় অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। তা না হলে অবৈধ অটোরিকশার নিচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুর সারি লম্বা হবে।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন রেখে বড় দেওড়া চন্ডীতলা আল মদিনার কারখানার ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক কর্মচারী তৈরি করছেন অটোরিকশা। প্রতিদিন এখানে অসংখ্য অটোরিকশা বিক্রি হয়।
কনটেইনার ভর্তি করে অটোরিকশা নিতে দেখা যায় গ্রাহকদের। কোথাও চলছে রং করার কাজ, কোথায় চলছে সংযোজনের কাজ। লোহালক্কড়ের টুংটাং শব্দে মুখর কারখানার পুরো পরিবেশ। আল মদিনার শোরুমের একজন কর্মচারীর আল -আমিন সাথে কথা হলে বলেন আমি বেশি কিছু বলতে পারব না।
তবে এটুকু বলতে পারি, সব জায়গা ম্যানেজ করেই ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি পাইকারিও বিক্রি হয়।’ টঙ্গী কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনের পর দিন রাস্তাঘাটে অবৈধ অটোরিকশার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অবৈধ অটোরিকশা কারখানা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
কথা হলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ৫৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী বিল্লাল হোসেন মোল্লা বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং যানজটমুক্ত করতে প্রশাসনও সিটি কর্পোরেশন যৌথ উদ্যোগে একটি সঠিক ব্যবস্থাপনার ভিতরে আনা উচিত, বর্তমানে এটি খুব বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
অতি শীঘ্রই এই বিষয়টি সিটি কর্পোরেশন সভায় আলোচনা করে সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে লাইসেন্স শাখার কর্মকর্তা সুমন জানান অটো রিক্সা তৈরির জন্য কোন প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছ থেকে কোন ধরনের লাইসেন্স গ্রহণ করেন নাই, এছাড়াও অটো রিক্সা তৈরির জন্য কোন ধরনের লাইসেন্স প্রদান করা হয়
না। সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল -১ এর প্রধান নির্বাহীর সাথে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ডেসকো টঙ্গী জোনের ইঞ্জিনিয়ার শাকিল জানান অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন সময় মোবাইল কোট পরিচালনা করা হয়ে থাকে অনেক গ্যারেজে জরিমানা করা হয়েছে, এরপরও বিদ্যুৎ চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।