সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে বন্ধ হচ্ছেনা চোরাচালান। এই উপজেলার জাদুকাটা নদী, বডার বাজার, বারেকটিলার আনন্দপুর, কড়ইগড়া, রাজাই, রজনী
লাইন, বুরুঙ্গা ছড়া, নীলাদ্রী লেকপাড়, খনি প্রকল্প, লাকমা, লালঘাট, চারাগাঁও এলসি পয়েন্ট, কলাগাঁও, জঙ্গলবাড়ি, লামাকাটা, সুন্দরবন, কচুয়াছড়া পয়েন্টকে নিরাপদ রোড হিসেবে
দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করছে সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাকারবারীরা। তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওই সব পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে প্রতিদিন কয়লা, পাথর, চিনি, ঘোড়া, নাসির উদ্দিন বিড়ি,
কসমেটিসক, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ লাখলাখ টাকার মালামাল পাচাঁর করছে বলে খবর
পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (৭ই ডিসেম্ভর)
ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩এর ৩এস পিলার ও সাহিদাবাদ বিজিবি পোষ্টের সামনে দিয়ে ৩-৪ শ লোক দিয়ে ভারতে ভিতর থেকে প্রায় ১০লাখ টাকার পাথর পাচাঁর
করে ঠেলাগাড়ি দিয়ে বিজিবি ক্যাম্পের সামনের রাস্তা দিয়ে লাউড়গড় বাজারের চারপাশে মজুত করা হয়। কিন্তু কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে গতকাল শুক্রবার (৬ই ডিসেম্ভর) রাত
১২টা থেকে জাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে ৪-৫শ বারকি নৌকা দিয়ে কয়লা ও পাথরসহ চিনি, ফুছকা, কসমেটিকস ও মাদকদ্রব্যসহ অর্ধকোটি টাকার মালামাল পাচাঁর করাসহ পাশের
চাঁনপুর সীমান্তের আনন্দপুর ও ১২০৩পিলার এলাকা দিয়ে ভারত থেকে ফুছকা,চিনি, কম্বল, নাসিরউদ্দিন, ঘোড়া, কমলা ও মদসহ প্রায় কোটি টাকার মালামাল গত ৩দিনে পাচাঁর করা
হয়েছে। এছাড়া টেকেরঘাট সীমান্তের বুরুঙ্গা,রজনীলাইন, নীলাদ্রী লেকপাড়, বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা, লালঘাট, চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট, বাঁশতলা, এলসি পয়েন্ট, কলাগাঁও,
জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে লাখলাখ টাকার কয়লা ও মাদকদ্রব্য পাচাঁরের খবর পাওয়া গেছে।
এমতাবস্থায় গতকাল শুক্রবার (৬ই ডিসেম্ভর) দুপুরে টেকেরঘাট সীমান্তের বড়ছড়া
শুল্কস্টেশনে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ১টি রাইফেলসহ জালাল মিয়া (২০), রাজু মিয়া (২০) ও রাসেল মিয়া (২০) গ্রেফতার করে বিজিবি। তারা বড়ছড়া সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা। পরে রাতে
সুনামগঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করে বিজিবির সিলেট সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান- নাজমুল নামের এক যুবক তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত
এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর জন্য লং রেঞ্জ শুটিং রাইফেল নামের জব্দকৃত অস্ত্রটি অবৈধ ভাবে ভারতথেকে নিয়ে এসেছে। তবে সেই অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করার
আগেই আমরা তার ৩জন সহযোগীকে আটক করেছি। আর সন্ত্রাসী নাজমুলকে গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৩শে অক্টোবর ভোরে চাঁনপুর সীমান্তের
বারেকটিলারআনন্দপুর ও ১২০৩পিলার সংলগ্ন বড়গোফ নামকস্থানে অভিযান চালিয়ে ৬টি
ডেটেনেটর ও ৬টি বিস্ফোরক উদ্ধার করেছিল র্যাব। এছাড়াও এই সীমান্তে অস্ত্র নিয়ে
চোরাকারবারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ২০১৯সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারী টেকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইন এলাকা থেকে ৪৪ পিস ইলেকটিক ডেটোনেটর, ৬২ পিস
কেলভেক্স ও ১৫ বোতল মদসহ আবুল কাসেম (২৮) কে বিজিবি গ্রেফতার করাসহ ওই বছরের ১৭ই মার্চ টেকেরঘাট নীলাদ্রী লেকপাড়ের কোয়ারী থেকে অভিযান চালিয়ে গুলি ভর্তি বিদেশী
রিভলবারসহ শহিদ মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করে র্যাব। তাছাড়া লাউড়গড় সীমান্তের জাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন মালামাল পাচাঁর করতে গিয়ে
বিএসএফের গুলিতে ও নদীতে ডুবে এপর্যন্ত শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে।