শাহানাজ পারভীন: তোমাকে জীবন্ত সেই কবে দেখেছি দিন তারিখ ঠিক মনে করতে না পারলেও এটুকু মনে রাথতে পেরেছি যে তুমি এসেছিলে কোন এক শীতের কুয়াচ্ছন্ন ভোরে। সুর্য্যি মামার উদয় তখোন হয়নি। তখোন ব্যস্ততা গ্রাস করতে পারেনি তোমার নি:শব্দ বার্তাকে। আড়মোড়া ভেঙে কোন কোন পাখি তার স্বজনকে হাকডাক শুরু করেছে মাত্র। প্রকৃতির পত্র পল্লবে তেমন কোন ঝড়ো আঘাত আসেনি যা তোমর সৌন্দর্যকে ম্লান করে দেবে।
শরতের শেষে শীতের আনাগোনায় প্রকৃতি যেন তার নতুন সুগন্ধে মন ভরিয়ে দিতে আগমন ঘটায় শিউলীর। খুব কম সংখ্যক মানুষের বাড়িতে এই সুগন্ধী ফুল গাছের দেখা মেলে।গ্রাম্য জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে মিশে থাকা এই ফুলের আরেক নাম শেফালী।
মনে পড়ে কবির কবিতা আর বাউলের গানে এই বাংলার রুপের কথা। কতোটুকুই বা দেখেছি বাংলার শ্যামল রুপ?
বাংলাদেশের ঋতু পরিবর্তনের মূলে রয়েছে জলবায়ুর প্রভাব ও ভৌগলিক অবস্থান। যার কারনেই এখানে প্রকৃতি তার সৌন্দর্য প্রকাশের সুবিধা পায় একটু বেশি।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তার ঋতুবৈচিত্রের মধ্যে চমৎকারভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়। প্রতিটি ঋতু তার অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগমণ করে এবং নিজের অনাবিল সৌন্দর্য উপহার দিয়ে বিদায় নেয়।
শিউলি/শেফালী ফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Nyctanthes arbor-tristis)। এটি দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল, ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকা জুড়ে দেখতে পাওয়া যায়। শেফালী নামেও পরিচিত এই ফুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য ফুল ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুরি প্রদেশের প্রাদেশিক ফুল। ১০ মিটারের মত লম্বা এই গাছের পাতা গুলো ৬-৭ সেন্টিমিটার লম্বা ও সমান্তরাল প্রান্তের বিপরীতমুখী থাকে।
সুগন্ধি জাতীয় এই ফুলে রয়েছে পাঁচ থেকে সাতটি সাদা বৃতি ও মাঝে লালচে-কমলা টিউবের মত বৃন্ত। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামী হৃদপিণ্ডাকৃতির। এই ফুল শরৎকালে ফোটে। এর ফুলগুলি রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়।