মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের পরীকোট গ্রামের আইয়্যুব আলী বাপের বাড়ি থেকে প্রায় ১৩ বছর আগে নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনা (২৫)কে নারী পাচারকারী দলের দুই সদস্য পিতা ও পুত্রকে গ্রেফতার করেছে সেনবাগ থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (৩১ আগেষ্ট) গভীর রাতে সেনবাগ থানার এসআই সুবজ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স উপজেলার ডমুরুয়া ইউপির ৩নং ওয়ার্ডের আইয়্যুবের বাপের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মানব পাচারকারী মোঃ ইদ্রিস মিয়া (৫৭) ও
তার ছেলে আবদুল্লাহ শাফী (২৩) কে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে নোয়াখালী বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
এ ঘটনায় ১৭ নভেম্বর ২০২০ ইং নোয়াখালী নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মানব পাচার, প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর ৭/৯/১০ ও ১১ ধারায় পাচারের শিকার নারী নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনা বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে মামলা নং-৩ তারিখ।
ওই মামলায় আসামী করা হয় পাচারের শিকার নারী জোসনার জেঠী আফরোজা বেগম প্রকাশ মুন্নি (৫৩), জেঠা ইদ্রিস (৫৮),জেঠাতো ভাই ভাই আবদুল্লাহ প্রকাশ শাফী (২৩ )সহযোগী জান্নাতুল ফেরদাউস প্রকাশ কাজল (৫৪),মোঃ শহীদ
উল্লাহ( ৬৩),জয়নাল আবদিন (৫৮),ফেরদাউস আরা বেগম (৫৩),রাশেদুল করিম (৩২) ফাতেমাতুজ জোহুরা প্রকাশ ববি (৩৪) ও ফারজানা আক্তোর প্রকাশ পলি (২৯)কে। মামলাটি দায়েরর পর আদালত মামলাটি তদন্ত করার নির্দেশ দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিষ্টিকেশন (পিবিআইকে)।
এরপর বাদি পিবিআইয়ের প্রতি অনাস্থা দিলে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সেনবাগ থানাকে নির্দেশ দিলে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি-তদন্ত)
ইকবাল হোসেন মামলাটি তদন্ত করে ১১ আসামীর মধ্যে ৪জনকে বাদ দিয়ে অপর ৭জনের বিরুদ্ধে গত ২১/৪/২১ ইং মাবন পাচার আইনে চুড়ান্ত প্রদিবেদন দাখিল করেন।
এরপর বিজ্ঞ আদালত ৭ আসামী বিরুদ্ধে গত ১৭ আগষ্ট ২০২১ ইং ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। আদালতের ওয়ারেন্টের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সেনবাগ থানার এসআই সবুজ চন্দ্র পালের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স মানব পাচারকারী মোঃ ইদ্রিস ও তার ছেলে আবদুল্লাহ প্রকাশ শাফীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
জানাগেছে ,২০০৮ সালে ১৫ জুলাই পরীকোট গ্রামের আবদুল মালেক জমিদারের মেয়ে নাছিমা আক্তার প্রকাশ জোসনাকে ১১ বছর বয়সে তার জেঠি আফরোজা বেগম প্রকাশ মুন্নি (৫৩) জেঠা মোঃ ইদ্রিস মিয়া (৫৮) ও তার ছেলে
আদুল্লাহ শাফী(২৩) বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে পাচার করে ফেনী পৌরসভার রামপুর ১৮নং ওয়ার্ডের তাকিয়া রোড়স্থ জয়নাল আবদিনের নিকট ২লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়।
দীর্ঘদিন খোঁজাখুজির পরও তাকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় পাচারের শিকার ১১ বছরের ওই শিশুটি বর্তমান বয়স ২৬ বছর। পাচারের ১৫ বছর পর শারীর ও যৌন নির্যাতনের শিকার ওই
শিশুটি বর্তমানে ২৬ বয়সে যুবতী নারীটি কৌশলে পালিয়ে গত ৭ নভেম্বর সেনবাগে গ্রামের বাড়িতে ফিরে এলে পুরো এলাকায় চা ল্যেও সৃষ্ঠি হয়। ওই নারী ফিরে এলে
পাচারকারীরা প্রথমে বিষয়টির ব্যাপারে ভুল স্বীকার ১২ শতাংশ জমিন পাচারের শিকার ওই নারীর নামে লিখে দেওয়া কথা আপোস মিমাংসা করলেও পরবর্তীতে তা অস্বীকার করে। এবং ওই নারীর পিতা-মাতা ও স্থানীয় ইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করে হয়রানী করছে অভিযোগ করেন।