শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪
spot_img
Homeবিশেষ সংবাদহামারগুলার কষ্ট কাঁইও দেকপের আইসে না বাহে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: পানিবন্দি...

হামারগুলার কষ্ট কাঁইও দেকপের আইসে না বাহে, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: পানিবন্দি ৮০ হাজার মানুষ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদে হু-হু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর ও নিম্নাঞ্চলে বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে পানিবন্দি মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্য, পানি ও সেনিটেশনের সমস্যা।

প্রকট সমস্যা দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর খাদ্যের। ব্রহ্মপুত্র নদে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার নীচে পানি অবস্থান করছে। অপরদিকে ধরলা নদীর পানি বেশ কিছুটা কমে গিয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সরজমিনে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, একদিকে বন্যায় মানুষ ভাসছে। অপরদিকে তিস্তা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। জেলার রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াসাম ও খিতাবখাতে প্রচণ্ড নদী ভাঙনে চলতি বন্যা মৌসুমে প্রায় সহস্রাধিক বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে গতিয়াসাম এলাকায় প্রায় ২০ থেকে ২২টি পরিবার বাড়িঘর সড়িয়ে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
তাদের মধ্য থেকে ইমান আলী (৪৫) ও সামাদ মিয়া (৫০) জানান, চলতি বন্যা মৌসুমে এখানে প্রায় ৭/৮শতাধিক বাড়িঘর

নদীতে বিলীন হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান বা এমপি কোন খোঁজখবর নেয়নি।ওই এলাকার কতভানু (৪৫), ছালেহা (৩৪) ও ছকিমন (৪০) জানান, ‘হামারগুলার কষ্ট কাঁইও দেকপের আইসে না বাহে। তোমরাগুলা ছবি তুলি নিয়া যায়া কি করবেন?’ এমন আক্ষেপ ঝরে পরছিল তাদের মুখ মন্ডলে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শামসুল ইসলাম জানান, শুনছি তিস্তায় ৮ হাজার কোটি টাকার মহাপ্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই কথা বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সরকারি লোকজন সান্ত্বনা দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা তো শেষ হয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই ভিটা কি আমরা ফেরৎ পাবো?

এদিকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ফলে প্রভাব পরেছে কৃষিতে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলায় ২৪ হাজার ২৫০ হেক্টর রোপা আমন, শাক-সবজি ও বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। এই পানি দ্রুত সড়ে না গেলে কৃষকের জন্য সমস্যা হবে।

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় উলিপুর উপজেলার অনন্তপুর বাজারের কাছে বেড়ি বাঁধের উপর দিয়ে পানি ঢুকে নতুন করে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার তিন শতাধিক চরের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দি হয়ে পরেছে।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ