মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-:সুনামগঞ্জে পৌর মেয়র ও নারী কাউন্সিলরের মধ্যে চলছে কঠিন লড়াই। তারা জনসেবা রেখে রহস্যজনক কারণে একপক্ষ অন্যপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
থানা ও আদালতে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করার পর তেমন কোন সাড়া পড়েনি।
কিন্তু নারী কাউন্সিলর বাদী হয়ে পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ আদালতে দায়ের করার পর থেকে পুরো জেলা জুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- জেলার ছাতক পৌর সভার অভ্যন্তরীন চাঁদাবাজি ও তার ভাগভাটোয়ারাসহ নানান বিষয় নিয়ে বর্তমান পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী ও নারী কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলীর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছিল।
তারই জের ধরে গত বুধবার (২২ আগষ্ট) দুপুরে ছাতক পৌরসভার কার্যালয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এনিয়ে দুপক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও পৌরসভা কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাংচুর করাসহ নারী কাউন্সিলরকে লাি ত করা হয়।
এঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সোমবার (২৭ আগষ্ট) ছাতক পৌরসভার অফিস সহায়ক দ্বীপ্ত বণিক বাদী হয়ে পৌরমেয়রের পক্ষে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা নং- ২৮ দায়ের করে।
পৌরসভা কার্যালয়ে হামলা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় নারী কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলীকে প্রধান আসামী করে তার স্বামী মাছুম আহমদ, ভাই নোমান ইমদাদ ও কার্জন মিয়াসহ ২৫জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে দায়েরকৃত মামলায়।
অপরদিকে গত মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগে নারী কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জাকির হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। আর এই অভিযোগ দায়েরের পর থেকে পুরো জেলা জুড়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।
এব্যাপারে ছাতক পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন- পৌরসভায় হামলা চালিয়ে ভাংচুরের ঘটনায় পৌরসভার পক্ষ থেকে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করার কারণে নারী কাউন্সিলর কাকলী আমার বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক একটি অভিযোগ দায়ের করেছে সত্য ঘটনাকে আড়াল করার জন্য।
গত ১৮ আগষ্ট পৌরসভার বাগবাড়ি এলাকার ব্যাটারী চালিত টমটম গাড়ির স্ট্যান্ড থেকে অবৈধ ভাবে চাঁদাবাজির ঘটনায় কাউন্সিলর কাকলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে চালকরা। নারী কাউন্সিলর তাসলিমা জান্নাত কাকলী বলেন- পৌর মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবত কুপ্রস্তাব দেওয়াসহ আরো নানাভাবে হয়রানী করছিলেন।
অবশেষে গত ২২ আগষ্ট দুপুরে পৌরসভার সভা শেষে সবাইকে বিদায় করে দিয়ে যৌন হয়রানীর চেষ্টা ও শ্লীলতাহানি করেন। থানায় আমার অভিযোগ গ্রহণ না করার কারণে বাধ্য হয়ে আদালতের ধারস্থ হয়েছি। থানায় আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
আমি লম্পট পৌর মেয়রের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্থি চাই।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি এডভোকেট নান্টু রায় ও ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন, আদালত ও থানায় দায়েরকৃত পৃথক ২টি মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।