কুড়িগ্রামের রৌমারীতে চরশৌলমারী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৮ বছরের জমাকৃত ১ হাজার ৬শ’ কেজি সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির করেছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের এই প্রধান শিক্ষক।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে এসব বই বিক্রির অভিযোগে তদন্ত করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বই বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পান বলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আইবুল ইসলাম নিশ্চিত করেন।
অভিভাবক সুত্রে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন ও নতুন বইগুলো স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর দোকানে বিক্রি করেন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। গত ২০ অক্টোবর রাতের আধারে চরশৌলমারী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার প্রতিষ্ঠানে গচ্ছিত রাখা মাধ্যমিক স্তরের ২০১৩ সাল হতে ২০২১ সালের সরকারি বই ১৬শ’ত কেজি প্রতি ১৩
টাকা দরে চরশৌলমারী বাজারের আবুল কাসেম শিকদার নামের এক ব্যবসায়ীর নিকট অবৈধভাবে বিক্রি করেন। এসব সরকারি বই বিক্রি করার কোন অনুমতি কিংবা কোন রেজুলেশন ছাড়াই তিনি বিক্রি করে দেন।প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে এবং ম্যানেজিং কমিটির অগোচরে বইগুলো বিক্রয় করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়টি ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫শতাধিক ছাত্রী রয়েছে। এ বিষয়ে অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ ও আব্দুর রহিমসহ অনেকেই জানান,অবৈধভাবে বই বিক্রির ঘটনা এর আগেও এ বিদ্যালয়ে ঘটেছিল। আমরা শুনেছি এবারেও প্রায় ১৬শ’ কেজি সরকারি বই বিক্রি করেছেন তিনি।
তারা আরও বলেন, শুরু থেকে প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবী জানান তারা। সরকারি বই ক্রয়কারী ব্যবসায়ী আবুল কাশেম শিকদার বলেন, বইখাতাসহ এলাকায় বিভিন্ন ভাঙরি মালামাল আমি ক্রয় করে থাকি। কয়েকদিন আগে চর শৌলমারী বহুমুখী বালিকা
উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমাকে ডেকে নিয়ে তার স্কুলের বইগুলো বিক্রি কের দেন। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমিন ব্যাপারির সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের টয়লেট কক্ষে পুরাতন বইগুলো রাখা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, টয়লেট ব্যবহারের লক্ষে বইগুলো রাখার
অন্য কোন জায়গা না থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক স্যারকে বলে বইগুলো বিক্রি করে দিয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আইবুল ইসলাম অনুমতি না নিয়ে বিক্রির ব্যাপারে বলেন,সরকারি বই বিক্রি করা আইনত দন্ডনীয়।একাডেমিক সুপারভাইজের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিক্রির সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত রিপোর্ট ইউএনও
মহোদয়ের নিকট জমা দেয়া হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) আল ইমরান জানান, সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ পেয়েছি। আজ তো সরকারি অফিস বন্ধ আগামী দুদিনের মধ্যে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।