মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া: সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বালিয়াঘাট, চারাগাঁও, টেকেরঘাট, চাঁনপুর, লাউড়গড় ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য।
চোরাকারবারীরা তাদের দুই গডফাদারকে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত ভারত থেকে ওপের মদ, গাঁজা, ইয়াবা, কমলা, বিড়ি, কাঠ, কয়লা, পাথর, গরু ও অস্ত্র পাচাঁর করছে ।
এর ফলে সরকার লক্ষলক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বি ত হচ্ছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে চোরাই কয়লা বোঝাই ২টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ ৪ চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে। আজ শনিবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাঘারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত চোরাকারবারিরা হলো- জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বালিয়াঘাট গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে রুহুল আমিন, একই গ্রামের আব্দুল হাফিজের ছেলে জাফর আলী, বাবুল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন ও ফয়েজ আলীর ছেলে জয় হোসেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল শুক্রবার ভোরে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা কালাম, লাকমা এলাকা দিয়ে জিয়াউর রহমান জিয়া, টেকেরঘাট সীমান্তের চুনাপাথর খনিপ্রকল্প এলাকা দিয়ে ইসাক মিয়ার নেতৃত্বে চোরাকারবারী রতন
মহলদার, শরীফ মহলদার, কামরুল, তরিকুল, মোক্তার মহলদার, জয় হোসেন, জাকির হোসেন, জাফর আলী, রুহুল আমিন, মানিক মহলদারসহ চারাগাঁও সীমান্তের বাঁশতলা, ১১৯৬ পিলার ও লালঘাট এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী খোকন মিয়া, মানিক মিয়া, একদিল মিয়া, হরমুজ আলী,
রহমত আলী, শহিদুল্লাহ, বাবুল মিয়া, হারুন মিয়া, কাসেম মিয়াগং পৃথক ভাবে প্রায় ৫০মেঃটন কয়লা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাঁচার করে সীমান্তের বিভিন্ন বসতবাড়ি, পুকুর ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখে।
পরে পাচাঁরকৃত ১বস্তা (৩৫ কেজি) চোরাই কয়লা থেকে বালিয়াঘাট বিজিবি ক্যাম্পের নামে ১৫০টাকা, চারাগাঁও ক্যাম্পের নামে ১নৌকা (৪ মেঃটন) চোরাই কয়লা থেকে ৫হাজার টাকা ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে প্রতিবস্তা চোরাই কয়লা থেকে আব্দুর রাজ্জাক ২০টাকা, হাবিব
সারোয়ার আজাদ মিয়া ২০টাকাসহ আরো বিভিন্ন নামে সোর্স পরিচয়ধারী জিয়াউর রহমান জিয়া, কালাম মিয়া, ইসাক মিয়া, রমজান মিয়া ও শফিকুল ইসলাম ভৈরব চাঁদা নিয়ে লালঘাট গ্রামের সামনে অবস্থিত সমসার হাওরে ২টি ও ড্রাম্পের বাজার সংলগ্ন পাটলাই নদীতে ৩টি ইঞ্জিনের
নৌকায় মোট ২০মেঃটন চোরাই কয়লা বোঝাই করে নদী পথে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা থানার অপরদিকে নদীর তীরে অবস্থিত সাজু মিয়া ও আজিজ মিয়ার ডিপুতে পাঠায়। এখবর পেয়ে সকাল অনুমান ৬টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলা দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সুলেমানপুর
বাজার সংলগ্ন পাটলাই নদী থেকে ৮মেঃটন চোরাই কয়লা বোঝাই ২টি ইঞ্জিনের নৌকাসহ চোরাকারবারী জয় হোসেন, জাকির হোসেন, জাফর আলী, রুহুল আমিনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
ওই সময় বাকি ৩নৌকা নিয়ে লালঘাট গুচ্ছগ্রাম গ্রামের লাল হোসেনের ছেলে বিশিষ্ট চোরাকারবারি খোকন মিয়া, একই গ্রামের আব্দুল মোতালিবের ছেলে মানিক মিয়া ও মৃত আলী বক্সের ছেলে জামাল মিয়া সুকৌশলে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এঘটনার প্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় তাহিরপুর থানার
এসআই আবু সিদ্দিক বাদী গ্রেফতারকৃত ৪জনসহ পালিয়ে যাওয়া ৩চোরাকারবারির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- তাহিরপুরে ৩টি শুল্ক ষ্টেশন থাকার পরও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।