বশির আলম: আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ‘আমি পদ চাই না। আওয়ামী লীগের সমর্থক হয়ে থাকতে চাই। মানুষ মাত্র ভুল করে, আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে না।
আমিও ভুল করতে পারি, আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে বহিষ্কারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার এবং আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সমর্থক হয়ে দলের পাশে থাকার সুযোগ চাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু এমন একটি শব্দ ব্যবহার করে ভুল বুঝানো হয়েছে আমাকে
দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমার কথাগুলো খুলে বললে আমি ন্যায় বিচার পেতাম। মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম তার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমাকে তিন বছরের জন্য পদ দেওয়া হয়েছে।
আমাকে বহিষ্কার করে আমার ও আমার পরিবারের এবং আমার অস্তিত্বের মধ্যে যে আঘাত দেওয়া হয়েছে সেটা আমি মানসিকভাবে মেনে নিতে পারছি না। আমার বিরুদ্ধে অন্যায় করা হয়েছে। দলের কাছে আমি আপিল করবো। আমার ভুল হতে পারে।
কিন্তু আমি কোনো পাপ ও অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত না। মানুষের ভুল হয়। ভুলের জন্য আমি ক্ষমা চাই। প্রধানমন্ত্রী যেন আমাকে পুনরায় বিবেচনা করেন। এই সময় তিনি আরও বলেন, আমি রাস্তার ধারে ধারে ঘুরে প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতায় মানুষের জন্য কাজ করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর আমার মায়ের স্থান । আমি আকুল আবেদন করবো গাজীপুরবাসীর জন্য এবং আমার জন্য। পদ পদবী বিষয় না, আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ সমর্থক হয়ে দলের পাশে থাকার সুযোগ চাই। তিনি বলেন, আমার বুুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছি।
অনেকেই না বুঝে হয়তো সমালোচনা করতে পারেন। আমার অস্তিত্বের মধ্যে সব জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর আদর্শের জায়গা। বঙ্গবন্ধুর জন্য আওয়ামী লীগের জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী জন্য যদি আমাকে জীবন দিতে হয় আমি সদা প্রস্তুত আছি।
আমাকে যেন অন্যায় এবং মিথ্যা কিছুর মধ্যে জড়ানো না হয়। আমি অপরাধ করলে আমার শাস্তি হোক আমার ফাঁসি হোক আমার অপরাধের জন্য আমার একটা কর্মীর গায়ে যেন কোনো আঘাত করা না হয়। সংবাদ সম্মেলনের আগে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম এর ভক্ত, কর্মী-সমর্থকদের সামনে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
কেদেঁছেন গাজীপুর অপারময় সাধারণ জনগন। এ সময় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত ১৯ই নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্তে আওয়ামী
লীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয় মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি কটূক্তির অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়ায় এ নেতাকে দলের পদ থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তার প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়।
একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে তার বহিষ্কার আদেশে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আজমত উল্লাহ খাঁন এর সমর্থন গোষ্ঠী টঙ্গী নতুন বাজার আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আনন্দ উল্লাসে মিষ্টি বিতরন আতশ বাজিঁ করতে দেখা যায়। এসময় সাংবাদিকদের এড. আজমত উল্লাহ খান বলেন, আমরা
মহানগর আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে কাজ করবো এবং জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।