তাহিরপুর সীমান্তে চলছে তেলেসমাতি কান্ড: মদসহ সোর্স রমজান গ্রেফতার
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে ভারত থেকে অবাধে কয়লা, পাথর, কাঠ, গরু,
ঘোড়া, বিড়ি, কমলা, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করছে বলে জানা গেছে। অবশেষে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ১২ বোতল ভারতীয় মদসহ সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী রমজান মিয়া (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে।
সে জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের লালঘাট গ্রামের মৃত কালা ফকিরের ছেলে। আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বিজিবি, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো গতকাল সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত অনুমান ১১টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও শুল্কষ্টেশনের পূর্ব পাশ দিয়ে ভারত
থেকে অবৈধ ভাবে ৬মে.টন কয়লা ও বিপুল পরিমান মদ পাচাঁর করে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, লাল মিয়া ও আনোয়ার মিয়াগং।
এখবর পেয়ে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ১২ বোতল মদসহ সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়াকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে। এসময় তার অন্য সহযোগীরা সুকৌশলে পালিয়ে যায়।
সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারীরা চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী কয়লা ব্যবসায়ীর সহযোগীতায় ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রতিরাতে ১০ থেকে ১৫ মে.টন কয়লা ও
মাদকদ্রব্য পাচাঁরের পর সেই অবৈধ কয়লা এলসির মাধ্যম্যে আমদানীকৃত বৈধ কয়লার সাথে মিশিয়ে বৈধ বলে পাচাঁর করে।
এজন্য সোর্স পরিচয়ধারী শফিকুল ইসলাম ভৈরব ও রমজান মিয়া মিলে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের নাম ভাংগিয়ে ১টন অবৈধ কয়লা থেকে ১হাজার টাকা, স্থানীয় ইউপি মেম্বার হাসান আলীর নামে
৫শ টাকা ও জনৈক ২ সাংবাদিকের নামে ১বস্তা (৫০ কেজি) কয়লা থেকে ২০টাকা চাঁদা নেয়।
একই ভাবে এউপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্তে সোর্স ইয়াবা কালাম, মানিক মিয়া, একদিল মিয়া, খোকন মিয়া, টেকেরঘাট সীমান্তে সোর্স জিয়াউর রহমান জিয়া, রতন মহলদার, শরিফ মহলদার,
কামাল মিয়া, চাঁনপুর সীমান্তে সোর্স আবু বক্কর, রফিকুল ইসলাম, লাউড়গড় সীমান্তে সোর্স এরশাদ মিয়া, জজ মিয়া ও বীরেন্দ্রনগর সীমান্তে সোর্স লেংড়া জামালগং ওপেন চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নির্দেশনায়
সম্প্রতি তাহিরপুর থানা-পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান অবৈধ কয়লা ও একাধিক ইঞ্জিনের নৌকাসহ ১১জনকে গ্রেফতার করে পৃথক মামলা দিয়ে সবাইকে জেলহাততে পাঠিয়েছে। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাকারবারীদের নিয়ন্ত্রণকারী দুই গডফাদারকে গ্রেফতার না করার
কারণে সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য স্থায়ীভাবে বন্ধ হচ্ছে না জানা গেছে।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন- সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে যারা চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনায় আমাদের অভিযান চলছে।