মোজাম্মেল আলম সুনামগঞ্জ জেলার ৬ উপজেলা সীমান্তে চোরাকারবারীদের দাপট দিনদিন বেড়েই চলেছে। তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা, পাথর, চাল, চিনি, কমলা, কাঠ, বাঁশ, গরু, ঘোড়া, পান, সুপারী ও বিড়িসহ মদ, গাঁজা, ইয়াবা,
অস্ত্র পাচাঁর করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তার মধ্যে জেলার ৩ উপজেলা সীমান্তে পৃথক অভিযান চালিয়ে ইয়াবা, মদ ও জাল টাকাসহ ৫জন চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি। গ্রেফতারকৃত চোরাকারবারীরা হলো- জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর
ইউনিয়নের চারাগাঁও গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে নুর উদ্দিন (২৫), একই গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে জামাল উদ্দিন (২৩), বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০), একই গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে নুরুজ্জামান (৩২) ও
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের রামসাইরগাঁও গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে নাজমুল হাসান ইমন (২০)। আজ মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারী) বেলা ১১টায় ২ মাদক ব্যবসায়ীসহ ও অন্য ৩ চোরাকারবারীকে আদালতের মাধ্যমে পৃথক ভাবে কারাঘারে পাঠানো হয়েছে।
র্যাব, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড়, চাঁনপুর, টেকেরঘাট, বালিয়াঘাট, চারাগাঁও, বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবত রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কয়লা, পাথর, মদ, গরু, ঘোড়া, বিড়ি ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন
প্রকার মালামাল পাঁচার করছে। পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে অবৈধ কয়লা বোঝাই নৌকা ও মাদকদ্রব্যসহ এপর্যন্ত সোট ১৮জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। তারপরও থেমে নেই চোরাকারবারীরা। তাদের মধ্যে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট গ্রামের ইয়াবা কালাম, দুধের
আউটা গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া, চারাগাঁও সীমান্তের শফিকুল ইসলাম ভৈরব, আনোয়ার, সোহেল মিয়া, খোকন মিয়া, বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি গ্রামের লেংড়া জামাল, টেকেরঘাট সীমান্তের বড়ছড়া গ্রামের কামাল মিয়া, চাঁনপুর সীমান্তের নয়াছড়া গ্রামের আবু বক্কর, বারেকটিলা
গ্রামের রফিকুল ইসলাম, লাউড়গড় সীমান্তের লাউড়গড় গ্রামের জজ মিয়া, এরশাদ মিয়াগং নিজেরকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে দাপটের সাথে পুলিশ, বিজিবি ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে চাঁদা নিয়ে অবাধে চোরাচালান করছে। প্রতিদিনের মতো গতকাল সোমবার (১০ জানুয়ারী)
সকালে চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী শফিকুল ইসলাম ভৈরব ও লেংড়া জামালের নেতৃত্বে ভারত থেকে মদ পাচাঁর করে মোটর সাইকেল যোগে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বীরেন্দ্রনগর ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা চোরাকারবারী নুর
উদ্দিন ও জামাল উদ্দিনকে আটক করে। পরে তাদের শরীর ও মোটর সাইকেল তল্লাশী করে ৩০ বোতল ভারতীয় অফিসার চয়েজ মদ উদ্ধার করে। পরে ২জনকে রাতে থানায় হস্থান্তর করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মামলা দায়ের করা হয়। অন্যদিকে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর সীমান্ত দিয়ে
ইয়াবা পাচাঁরের পর র্যাব অভিযান চালিয়ে ৫হাজার ২শ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম ও নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে। এছাড়া দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে ১১ হাজার টাকার জাল নোটসহ নাজমুল হাসান ইমনকে পুলিশ গ্রেফতার
করে। সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল মাহবুবুর রহমান, র্যাব ৯এর কোম্পানী অধিনায়ক লে.কমান্ডার সি ন আহমেদ ও দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেব দুলাল ধর
পৃথক অভিযানে ৫জনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- সীমান্তে চোরাচালান ও মাদকসহ সকল প্রকার অবৈধ কর্মকান্ড প্রতিরোধ করার জন্য এধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।