বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
spot_img
Homeআইন-অপরাধমাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কুড়িগ্রামের চিলমারী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে কমিটি গঠন, নিয়োগ বাণিজ্য, গাছ ও বইসহ নিলাম ছাড়াই মাদ্রাসার মূল ভবনটি বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, গভার্ণিং বডির মেয়াদ ২৮/০২/২০২২খ্রিঃ শেষ হয়েছে।

কাকতালীয় ভাবে অধ্যক্ষের চাকুরীর মেয়াদও একই তারিখে শেষ হয়। তবে গত ১৮ জানুয়ারী ২০২২খ্রিঃ গভর্নিং বডির সভাপতি আনোয়ার হোসেনের আকস্মিক মৃত্যুতে এবং কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে নতুন করে কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। অধ্যক্ষ প্রকাশ্যে কমিটি

গঠনের কার্যক্রম না করেই গোপনে তারই তাবেদারী লোকজনকে নিয়ে গভর্নিং বডি অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছেন। এমনও শোনা যায় যে, তিনি নিজের অপকর্মকে ঢাকার জন্য নিজেই সভাপতি পদে থাকার জন্যও পায়তারা করে চলেছেন।থানাহাট ইউনিয়নের ছাত্র অভিভাবক বাবু,

আব্দুল মান্নান, জিল্লুর রহমান বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের নিকট প্রকাশ্য কমিটির গঠনের জন্য আবেদন করলেও কোন সাড়া মেলেনি। তাই গভার্ণিং কমিটির গঠনে ভোটার তালিকা প্রকাশ করা, নোটিশ করা, অভিভাবক সদস্য নির্বাচন, শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন ইত্যাদি নিয়মের তোয়াক্কা না

করেই বরাবরের মতোই অধ্যক্ষ গোপনেই পকেট কমিটি গঠনে অটল রয়েছেন। এ জন্য তিনি মাদ্রাসা বোর্ডে পাঁচ হাজার টাকা কমিটি অনুমোদনের জন্য দিয়েছেন মর্মে গত রবিবার (২৭ ফ্রেরুয়ারী)স্টাফ মিটিংয়ে জানিয়েছেন। অপরদিকে মাদ্রাসার মূল টিনসেড বিল্ডিং ঘরটি নিলাম না

করেই ভেঙ্গে ফেলে বাজারে ও নিজস্ব লোকজনের কাছে পানির দামে বিক্রি করে দিয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান, রেজাউল, নুরুজ্জামানসহ অনেকেই বলেন, মাদ্রাসার পুকুরটি প্রতিবছর লিজ দেওয়া, আম ও কাঁঠাল বিক্রয়, গাছ ও প্রতি বছরই জানুয়ারীতে ছাত্র ছাত্রীদের নিকট

থেকে পুরাতন বই ফেরৎ নিয়ে মাদ্রাসায় থাকা অতিরিক্ত বইগুলো বিক্রয় করে হাজার হাজার টাকা অধ্যক্ষ একরাম উদ্দিন হাতিয়ে নিয়েছেন। গত জানুয়ারী মাসে ২টি কাঁঠাল গাছ, ১টি মেহগনি ও ৬টি ইউক্লিপটাস গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গভর্নিং

বডির সদস্য ও শিক্ষক জানান, গত ২০১৩খ্রিঃ থেকে ২০২১খ্রিঃ পর্যন্ত অধ্যক্ষ একরাম উদ্দিন মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অর্ধ কোটি টাকা বাণিজ্য করেছেন। ১৯২২খ্রিঃ প্রতিষ্ঠিত চিলমারী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসাটি কয়েক দফা নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে

স্থানান্তরিত হয়েছে। সর্বশেষ রমনা থেকে স্থানান্তরিত করে আলহাজ্ব মোঃ হাফিজুর রহমান নিজের জমিতে নিজ খরচে প্রতিষ্ঠানটি পূণঃপ্রতিষ্ঠিত করেন। ওনার মাধ্যমেই বর্তমান অধ্যক্ষ সুকৌশলে প্রতিষ্ঠানটিতে ঢুকে পরেন। পরে দুর্নীতি করার সুযোগ না পেয়ে ২০১৩ খ্রিঃ আলহাজ্ব হাফিজুর

রহমানকে সভাপতি পদ থেকে সড়িয়ে আপন মামা শশুর আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি পদে নিয়ে আসেন। উপজেলা সদরে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসনিক কোন প্রকার নজরদারি না থাকায় অধ্যক্ষ নিশ্চিন্তে অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতি চালিয়ে এসেছেন। অভিযুক্ত চিলমারী সিনিয়র

আলিম মাদ্রারাসার অধ্যক্ষ একরাম উদ্দিন বলেন,আমার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা । এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মো: তাহের আলী বলেন, অধ্যক্ষ একরাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সচেতন মহল ও ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্তের দাবীসহ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ