বশির আলম, গাজীপুরের গাছা এলাকায় গাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে শিক্ষক মো. মিল্লাত হোসেন কে স্কুল থেকে বহিষ্কার ও গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করেছে স্কুলের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল অবধি অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুল থেকে বহিষ্কার ও গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন শিক্ষার্থীর সাথে এমন নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটানোর পরেও অভিযুক্ত শিক্ষক অবাধে এসে ক্লাস পরিচালনা করছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও স্কুলের গভর্নিং বডি কমিটি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। তাই ন্যায্য বিচারের দাবিতে আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি।
ধর্ষিতার পিতা খোরশেদ বেপারী জানান, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী বিকালে মিল্লাত হোসেন আমার ছেলে মােঃ রাকিব (১৮) কে ফোন দিয়ে আমার জাতীয় পরিচয় পত্রটি নিয়ে আমার মেয়েকে স্কুলে যেতে বলে।
মিল্লাত হোসেনের কথা মতোন আমার মেয়ে আমার এনআইডি কার্ডটি নিয়ে স্কুলে গেলে মিল্লাত হোসেন আমার মেয়েকে স্কুল লাইব্রেরীতে নিয়ে গিয়ে লাইব্রেরী রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার মেয়েকে কুপ্রস্তাব দেয়।
কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে আমার মেয়ের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী করে এবং জোরপূর্বক ধর্ষন করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমার মেয়ে নিজেকে রক্ষা করে দৌড়ে
পালিয়ে যায় এবং বাসায় এসে আমার স্ত্রীকে বিষয়টি অবগত করে। আমার স্ত্রী আমাকে বিষয়টি অবগত করলে আমি স্থানীয় থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দেই।
তিনি আরোও জানান, ঘটনার ১ মাস অতিবাহিত হয়ে যাবার পরও স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্কুলের গভর্নিং বডির কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে নি।
তাদের প্রশ্রয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অবাধে চলাফেরা করছে এবং ক্লাস পরিচালনা করছে। আমি শিক্ষক মিল্লাত হোসেন ও মিল্লাত হোসেনকে যারা প্রশ্রয় দিয়েছে সকলের বিচার দাবি করছি।
তবে এবিষয়ে গাছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ জানান, গভর্নিং বডির সভাপতি রাশিদুজ্জামান জুয়েল মন্ডল দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে আসছে।সে ধারা
বহাল রাখতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন ঘৃণ্য অভিযোগের নাটক সাজিয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত শিক্ষক আসলেই কোন অপরাধ করেনি বা এমন কোন ঘটনার সাথে তিনি জরিত না।তাকে দীর্ঘদিন যাবত
ধরে আমরা চিনি। তাকে এর আগে এমন কোন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হতে দেখিনি বা কোনো অভিযোগ আসেনি।
এ বিষয়ে গভর্নিং বডির সভাপতি ও গাছা থানা যুবলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী রাশেদুজ্জাম জুয়েল মন্ডল বলেন, অভিযোগ আসার পরপরই সদস্যদের সহযোগিতায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই তদন্ত কমিটির প্রধান আমি।
আমাকে ছাড়াই অভিযুক্ত শিক্ষককে বাচাঁতে প্রধান শিক্ষক ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।
অভিযোগ আসার পর থেকেই দেখছি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনেক গাফিলতি রয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষককে বাঁচাতে এবং ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করছে।
এ বিষয়ে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ ইসমাইল হোসেন জানান, শ্লীলতাহানীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত চলমান। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।