সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে ঈদকে সামনে রেখে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামীদের চোরাচালান বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে
সিন্ডিকেড তৈরি করে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা, পাথর, বিড়ি, গরু, ঘোড়া, কাঠ, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করছে। সেই সাথে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল থেকে পুলিশ, বিজিবি ও
সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা উত্তোলন করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- আজ রবিবার (৩ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়গড়
সীমান্তের যাদুকাটা নদী, বারেকটিলা, পুরান লাউড়, শাহ-আরেফিন মোকাম, শাহিদবাদ ও মুকশেদপুর এলাকা দিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী এরশাদ মিয়া, শহিদ মিয়া, নাজিম মিয়া, জজ
মিয়া, নুরু মিয়া, রফিক মিয়া, আমিনুল মিয়া, রফিকুল ইসলামগং ভারত থেকে কয়লা, পাথর , মদ, বিড়ি ও গরু পাচাঁর শুরু করে। এখবর পেয়ে বিজিবি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের দক্ষিণ
মুকশেদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮৩হাজার ৩শত টাকা মূল্যের ভারতীয় নাসিরউদ্দিন বিড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে। কিন্তু পাশর্^বর্তী চাঁনপুর সীমান্তের রাজাই, কড়ইগড়া, নয়াছড়া ও
গারো ছড়া এলাকা দিয়ে সোর্স আবু বক্কর, আলমগীর গং মদ, পাথর, কয়লা ও গরু পাচাঁর করলেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে একই সময় টেকেরঘাট সীমান্তের রজনী লাইন, বড়ছড়া,
বরুঙ্গাছড়া ও চুনাপাথর খনিপ্রকল্প এলাকা দিয়ে সোর্স ইসাক মিয়া, কামাল মিয়াগং ভারত থেকে মদ, কয়লা, পাথর ও অস্ত্র পাচাঁর করার সময় উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের রজনী লাইন
এলাকায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে ১৯হাজার ৫শত টাকা মূল্যে ভারতীয় ১হাজার ৫শ কেজি চোরাই কয়লা জব্দ করেছে। কিন্তু বালিয়াঘাট সীমান্তের লাকমা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার
জেলখাটা আসামী ইয়াবা কালাম মিয়া, ইসলাম উদ্দিন, তাজু মিয়া ও জিয়াউর রহমান জিয়া গং মদ, ইয়াবা, কয়লা ও কাঠ পাচাঁর করলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি এবং কাউকে
গ্রেফতারও করতে পারেনি বিজিবি। তবে বিরেন্দ্রনগর সীমান্তের রংগাছড়া, জঙ্গলবাড়ি ও সুন্দরবন এলাকা দিয়ে সোর্স লেংড়া জামাল ও মস্তো মিয়াগং ভারত থেকে কয়লা, মদ ও পাথর পাচাঁরের সময়
বিজিবি অভিযান চালিয়ে ২৫হাজার ৫শত টাকা মূল্যের ভারতীয় ১৭ বোতল মদ পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করেছে। অন্যদিকে একই সময়ে চোরাচালানের নিরপাদ রোড হিসেবে পরিচিত চারাগাঁও
সীমান্তের কলাগাঁও, চারাগাঁও এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা ও লালঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, আনোয়ার মিয়া, বাবুল মিয়া, কুদ্দুস মিয়া,
খোকন মিয়া, শহিদ মিয়া, একদিল মিয়া, মানিক মিয়াগং পৃথক ভাবে ভারত থেকে চাল, কয়লা, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, কাঠ ও পাথর পাঁচার শুরু করে। এখবর পেয়ে সীমান্তের বাঁশতলা এলাকায় অভিযান
চালিয়ে ১৯হাজার ৫শত টাকা মূল্যের ভারতীয় ১হাজার ৫শ কেজি চোরাই কয়লা পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করে। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করতে পারেনি।
তাই সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধ করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও র্যাব প্রশাসনের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছে সচেতন কয়লা ব্যবসায়ীসহ
এলাকাবাসী। ভারত থেকে অবৈধ ভাবে পাচাঁরকৃত অবৈধ মালামাল আটকের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য বিজিরি অভিযান অব্যাহত থাকবে।