জাহিদ আল হাসান,কুড়িগ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একটি গ্রামে ৬ পরিবারে ভাংচুর ও লুটপাট হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ২৫-৩০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি
হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন। সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব এসব পরিবার নিরাপত্তা চেয়ে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার
ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চর বড়াইবাড়ি গ্রামের উজির মামুদের ছেলে মোঃ বাইজুদ্দিন (৪৫) এর সাথে একই এলাকার এনামুল-রফিকুল দ্বয়ের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল।
এ নিয়ে কোর্টে একটি মামলাও করেন বাইজুদ্দিন। যার নং-২১৫/২০১৫ইং এবং বিবাদী পক্ষ থেকে একটি ১০৭ ধারায় মামলা করেন। যার পিটিশননং-৩৫/২২ইং(কুড়িঃ)।
এমনতাবস্থায় বাইজুদ্দিন ও তার ভাই-ভাতিজারা কাজের সুবাধে জেলার বাইরে থাকায় গত (১৫ মে) দুপুরের দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে চর বড়াইবাড়ী
এলাকার বাইজুদ্দিন, জিয়ারুল হক, আজিজুল, আব্দুল হক, রেজাউল করিম ও শামছুলের বাড়ি ঘরে প্রবেশ কর এলোপাতাড়ি তাদের স্ত্রী সন্তানকে বেদম মারপিট করে এবং আতঙ্ক ছড়াতে ধারালো
অস্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করা হবে মর্মে হুমকি দিলে তারা প্রাণভয়ে পালিয়ে যায়। এই সুযোগে বাইজুদ্দিন ও তাদের ভাই-ভাতিজাদের বাড়ি-ঘর, স্বর্ণালঙ্কার, মটর পাম্প, স্প্রে মেশিন, ধান-চাল,
সোলার প্যানেল, ফ্যান, টিভি, ফ্রিজ, ট্রাংক, সুকেজ, নগদ টাকা ও আলমারী, অর্ধশত গরু-ছাগল সহ প্রয়োজনীয় আসববাপত্র সব লুট করে নিয়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য ২৫-৩০ লাখ টাকা।
এসময় এলাকাবাসী বাঁধা দিলে তাদেরও হত্যার হুমকি প্রদর্শন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ওই গ্রামের আমির হোসেন নামের একজন জানান, গত ১০মে বড়াইবাড়ি এলাকায় একটি সংঘর্ষে এক
ব্যক্তি নিহত হয়। এরই সুযোগে পূর্ব শত্রুতার খায়েশ মেটাতে হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে বাইজুদ্দিন ও তার ভাই-ভাতিজার বাড়িঘর লুটপাট করা হয়েছে।
আসলে তিনি বা তার ভাই-ভাতিজারা এর সাথে কোনভাবেই সম্পৃক্ত নয়। যা এলাকার সবাই জানে।
লুটপাটে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া আজিজুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন-আমি কুমিল্লায়
ধান কাটার কাজে ছিলাম। আমার স্ত্রী ফোনে বলছিল ঘরবাড়ি সব লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে এনামুল-রফিকুলেরা। স্ত্রীর ফোন পেয়ে বাসায় এসে দেখি ভাত রান্না করার হাড়ি-পাতিলও নেই।
আমার সব শেষ। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত এনামুলের বড় ভাই সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি হাসপাতালে আছি। এলাকায় কার ঘরবাড়ি লুটপাট হয়েছে আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ওখানে একটি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে সেটির জের ধরে হয়তো ভাংচুরের ঘটনা ঘটতে পারে।
নিরাপরাধ মানুষের ঘরবাড়ি অন্যায়ভাবে কেউ লুটপাট করে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।