আজ ৯ জুন কাঁঠালবাড়ি গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রাম শহর থেকে ৮ কি.মি. দুরে কাঁঠালবাড়ি বাজার ও আশেপাশের ৬টি গ্রামে পাকবাহিনী দেশীয় দালালদের সহযোগিতায়
নৃশংস হামলা চালিয়ে হত্যা করেছিল ৩৫ জন নিরপরাধ বাঙালীকে। সেই সাথে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ধবংস স্তূপে পরিণত করেছিল এইসব গ্রাম। দিবসটি পালনের জন্য স্থানীয়
দিশারী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও দিশারী পাঠাগার কালো পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাকবাহিনী ওই দিন সকালে কাঁঠালবাড়ি বাজারের ৩ দিক থেকে
অতর্কিত আক্রমণ করে। অগ্নিসংযোগ করে বাজার ও কয়েকটি গ্রামে। এতে বাজারের শতাধিক দোকান ও শিবরাম, সর্দারপাড়া, সন্ন্যাসী, ফকিরপাড়া, প্রমানিকটারী,খামার গ্রামের ৫ শতাধিক
পরিবারের বাড়ি ঘর পুড়ে যায়। এলোপাথারী হত্যাযজ্ঞে নিষ্ঠুরভাবে নিহত হন ৩৫ জন মানুষ। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রামানিকটারির ফজল ব্যাপারী, আবুল কাসেম, ছেরাবউদ্দিন, নুরবক্ত,
সর্দারপাড়ার মন্তা, শিবরাম গ্রামের মন্তাজ আলী, আবদুল জলিল, জহুর আলী, খামারের অলিয়ার, মনদ্দি, আজিম, ফকিরপাড়ার নুহ খন্দকার, তালুক কালোয়ার বসন্ত কুমার, প্রতাপের হাছিমুদ্দিন,
হরিকেশের রজব আলী, ঘোপাটারীর জহুর উদ্দিন, রায়পুরের ঘেচু মামুদ, সর্দার পাড়ার টেংরি বেওয়া, মাদ্রাসার ছাত্র শাহাদৎ। স্থানীয় দিশারী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী শহীদদের কিছু নাম সংগ্রহ এবং
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে ছোট একটি স্মৃতি সৌধ নির্মিত হলেও আজও সরকারি উদ্যোগে শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরী, দু:স্থ শহীদ পরিবারের পূণর্বাসন ও শহীদদের স্মরণে
নির্মিত হয়নি কোন স্মৃতিস্তম্ভ। দিশারী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও পাঠাগারের সভাপতি লেখক ও সাংবাদিক আবদুল খালেক ফারুক জানিয়েছেন, আমরা শহীদদের কিছু নাম ও হত্যাকান্ডোর বিবরণ সংগ্রহ
করেছি। কিন্তু গণহত্যার স্মৃতিচিহ্নগুলো ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের উচিত এই স্মৃতি ধরে রাখতে রাখতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন করা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন কমান্ডের
সাবেক কমান্ডার আবদুল আউয়াল গণহত্যার স্মৃতি ধরে রাখতে সরকারিভাবে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন।