কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের পিচিং ভেঙ্গে ২ঘন্টার ব্যবধানে ৩টি ঘর ও ৫টি গাছ নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। রোববার বেলা ৪টার দিকে উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকায় এ ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটে। হুমকির মুখে রয়েছে প্রায় হাজার হাজার বসত-বাড়ী,
পাত্রখাতা ফেইসকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজার ভিটা ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা, রাজার ভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলা সদর। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে এমন ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। পানি উন্নয়ন
বোর্ড অতি তারাতারি ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা। জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের কড়াল গ্রাস থেকে চিলমারীকে রক্ষার জন্য নির্মিত ব্রহ্মপুত্রের ডানতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প ও পাউবো বাঁধের কাজ শেষ
হতে না হতেই ২০১৭সাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের প্রায় ৬০০মিটার এলাকায় ধসের সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই এলাকা সমুহে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করলেও স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধের কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এদিকে গত বছর পুটিমারী
কাজলডাঙ্গার বাগানবাড়ী এলাকায় প্রায় ৩০০মিটার পিচিং ধসে যায়। সেখানে নামে মাত্র জিও ব্যাগ ফেলা হলেও বাগানবাড়ীর দক্ষিনে প্রায় ৫০মিটার এলাকায় পিচিং ধসে গিয়ে বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়।
রোববার বিকেলে সরেজমিনে উপজেলার পুটিমারী কাজলডাঙ্গা এলাকায় গিয়ে বাদশা মুন্সি ও শফিকুল ইসলামের ৩টি ঘর নদীতে ভেসে যাওয়ার কথা শুনা যায়। এ সময় ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গনের দৃশ্য দেখতে হাজারও নারী-পুরুষ ভীড় জমায়। ভাঙ্গন কবলিত এলাকার নুর বক্ত (৫৫),
মহির উদ্দিন (৬০), রবীন্দ্র দাস (৪০), সোহেল রানা (২৫), রাজু মিয়া (২৩), ভোলা চন্দ্র (২১), সন্তোষ কুমার (৪০), সতিষ চন্দ্র(৪০) সহ অনেকে এ প্রতিনিধিকে বলেন, হঠাৎ বেলা ৪টার দিকে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। পরে ২ঘন্টার ব্যবধানে ৩টি ঘর,১টি নলকুপ,১টি খড়ের গাদাসহ টয়লেট ও
গাছ-পালা স্রোতে ভেসে যায়।ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে প্রায় হাজার হাজার ঘর-বাড়ী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রোববার দুপুর পর্যন্ত ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দেখা যায়নি বলেও তারা জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে ও স্থায়ী ব্যবস্থা
গ্রহণ না করায় বিভিন্ন জায়গায় এমন ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান,উজানে ভাঙ্গন
সৃষ্টি হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জিও ব্যাগে বালূ ভর্তি করে ডাম্পিং না করে ফেলে রাখা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ৩টি পরিবারকে গৃহহারা হতে হয়েছে।
এব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রটেকটিভ ওয়ার্ক হিসাবে ভাঙ্গনের জায়গায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। যেখানে প্রয়োজন সেখানে বালু ভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে এবং এটি চলমান থাকবে।