বশিরআলম, বাল্যবিবাহ নারী নির্যাতন যৌতুক আইন সহ বিভিন্ন ধরনের আইনি কার্যক্রম থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত আমাদের সমাজে যৌতুকের বলির শিকার হয়ে অনেক নারী স্বামীর সংসারে
নির্যাতিতা হয়ে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে মেয়েদের সুখের কথা চিন্তা করে পরিবারের পক্ষ থেকে যৌতুক হিসেবে নগদ টাকা স্বর্ণালংকার ফার্নিচার আসবাবপত্র মেয়ে
শ্বশুরবাড়ি থেকে পন হিসেবে মেয়ের জামাইকে দিয়ে থাকে। সমাজে এটা এক ধরনের ব্যাধি যা বর্তমান সময়ে শিক্ষিত সমাজের প্রভাবটা অনেক বেশি দেখা যায়।
এটা যেন এক ধরনের সামাজিক রীতিতে পরিণত হয়ে গেছে। বিগত এক মাস পূর্বে গাজীপুর জেলা সদর বাড়িয়া ইউনিয়ন পাকুরিয়া গ্রামের সুধীর দাসের মেয়ে মৌসিরানী দাস (১৯) এর সাথে একই
ইউনিয়ন দক্ষিণ পাড়া গ্রামের নিহার দাসের ছেলে রাধা দাস (৩৮) সাথে গত ৮ জুলাই উভয় পরিবারের সম্মতিতে ধুমধাম অনুষ্ঠান করে বরপক্ষের সাথে পন দেওয়ার চুক্তি মোতাবেক যৌতুক
হিসেবে নগদ টাকা স্বর্ণালংকার আসবাবপত্র ওআনুষ্ঠানিক যাবতীয় ব্যয় বাবদ প্রায় ১১ লক্ষ টাকা খরচ করে কনের পরিবার বরের কাছে মেয়ে তুলে দেন। বর রাধা দাস স্ত্রীকে বাসর রাতেই বলে
তোমাকে তোমার বাবার বাড়ি থেকে আরো তিন লক্ষ টাকা দিতে হবে, বিষয়টি নিয়ে বাসর রাতে দুজনের মধ্যে দূরত্ব শুরু হয়। পরের দিন রাত্রে শুরু হয় মৌশিরানী দাস এর উপর নির্মম নির্যাতন,
রক্ষা পায়নি সঙ্গে থাকা দিদিমা, মৌসিরানী দাস এর উপর বরের বোন ও কাকিমারা মিলে মৌসির যৌনাঙ্গে আঙ্গুল দিয়ে আঘাত করে এমনকি ছবি ধারণ করে, এক পর্যায়ে অপবাদ দেওয়া শুরু করে
মৌসিরানী দাস হিজরা। এ সময় মৌসির স্বামী রাধাদাস শ্বশুরবাড়ির লোকের কাছে ফোন করে লোকজন যাওয়ার কথা বলে। মৌসির আত্মীয়রা তার শ্বশুরবাড়িতে গেলে তাদেরকে আটক করে
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখাইতে থাকে। একপর্যায়ে সেখান থেকে রক্ষা পেতে সদর থানা পুলিশ ৯৯৯ ফোনে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এই ঘটনায় মৌসির
পরিবার প্রাথমিক চিকিৎসা ও শারীরিক পরীক্ষা শেষে আদালতের গত ২৮ শে জুলাই মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন পিবিআইকে নির্দেশ দিলে, তদন্তকারী
কর্মকর্তা এসআই জহিরুল ইসলাম অদ্য রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তদন্ত কার্য পরিচালনা করেনি। এ বিষয়ে মামলার বাদি মৌসীরানী দাস প্রতিবেদককে জানান আমি এ বছর এইচএসসিতে পড়াশোনা
করছি। আমার পরিবার ও স্বামী রাধা দাসের উভয় পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে বিবাহ বন্ধন হয়। আমাকে যৌতুক চেয়ে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যে নির্যাতন করা হয়েছে আমি ন্যায়বিচার প্রার্থনা
করছি। এই ঘটনার বিষয় মামলার বিবাদী রাধাদাসের মুঠোফোনে ০১৬১ ০৫ ৮৮৯২৪ ফোন করে জানতে চাইলে তিনি তার স্ত্রী হিজড়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করে বোঝাতে চেয়েছেন।
নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেন, স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি লোকজনের কাছে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানান। পুলিশ আসার কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় স্থানীয়
ওয়ার্ড মেম্বার জামাল বলেন বিষয়টি আমিও স্থানিয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় সমাধান চেষ্টা করেছিলাম।
রাধা দাস তার বিয়েতে ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে এই মর্মে সমাধান করে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। মেয়েটি হিজড়া প্রসঙ্গে কথা বললে উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করেছিলেন। তবে রাধা দাস কাজটি ভালো করেনি। উচিত ছিল মেয়েটির চিকিৎসা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া।