করোনা মহামারি কাটিয়ে পুরোদমে ফিরেছে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম। তাই ২০২৩ সালে আরো বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু চায়না-বাংলাদেশ এক্সিবিশন সেন্টারের বিশাল জায়গাজুড়ে বসবে বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১ জানুয়ারিতে বানিজ্য মেলা উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে মেলা বসেছে রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে। তবে পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরের এ স্থানটিতে দ্বিতীয়বারের মতো বসবে এই মেলা।
এবারের বাণিজ্য মেলায় ১২টি দেশের ২৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ৪২টি প্যাভিলিয়ন, ৩১টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ২৩৮টি জেনারেল স্টল এবং ২৩টি খাবারের দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের এক লাখ ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের দুটি হলে সব স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতবারের মতো এবারও মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। এ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ফ্রি। প্রদর্শনী কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২২০টি সিসিটিভি বসানো হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, ইরান, ভারত, ইন্দোনেশিয়াসহ ১২টি দেশ বাণিজ্য মেলায় অংশ নেবে।
নির্দিষ্ট সময়ে মেলা উদ্বোধন করার লক্ষ্যে নির্মাণ শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগে স্টল বরাদ্দ পাওয়ায় নির্মাণকাজ যথাসময়ই শেষ হবে বলে আশা করছেন স্টল মালিকরা। এদিকে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৩০০ ফিট মূল সড়কটির কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীদের মেলায় আসতে যাতে কোনো বেগ পেতে না হয়, সে জন্য সড়কের কাজেও গতি বাড়ানো হয়েছে। দর্শনার্থীদের চলাচলের সুবিধার্থে চালু করা হবে বিআরটিসির স্পেশাল সার্ভিস। এদিকে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের নির্মাণকাজ বাণিজ্য মেলার সামনের অংশটুকু দ্রুত শেষ করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মেলা কর্তৃপক্ষ। পূর্বাচলের বাণিজ্য মেলা সফল করতে ইপিবি সব ধরনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইপিবি সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মেলার প্রধান ফটক ও প্রবেশদ্বারে তিনটি মেগাপ্রকল্পের কাঠামো ও বঙ্গবন্ধু কর্নার তৈরির কাজ চলছে। বেশির ভাগ স্টলের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। স্টিলের কাঠামো শেষ হলে স্টলে বোর্ড লাগানো ও রং দেওয়ার কাজ শুরু হবে। অনেক স্টলের কাঠামো দাঁড় করানো হয়েছে। স্টলের কাজ পুরোপুরি শেষ হতে আরো ৮-১০ দিন সময় লাগবে বলে জানান মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
সেভয় আইসক্রিমের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান (সেভয় আইসক্রিম) মেলায় দুই হাজার ৫০০ স্কয়ার ফিটের একটি প্যাভিলিয়ন নিয়েছে। বর্তমানে স্টিলের কাঠামো দেওয়া শেষের দিকে। বাকি কাজ দ্রুতই শেষ হবে। ’
বেঙ্গল পলিমার প্যাভিলিয়নের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. এমরান বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান বিগ প্যাভিলিয়নের দ্বিতীয় তলার নির্মাণকাজ চলছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। ’
মিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডি ইসাহাক মিয়া বলেন, ‘গতবার প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছিলাম ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে। তাই স্টল চালু করতে দেরি হয়েছিল। এ বছর স্টল বরাদ্দ পেয়েছি নভেম্বর মাসে।