নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইলে প্রতিদিনই ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। ছিনতাইকারী কাউছার চক্রের ভয়ে পুুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় একের পর এক ছিনতাই করে যাচ্ছে এই ছিনতাইকারী চক্র। এই চক্রে বেশির ভাগ জড়িত রয়েছে উঠতি বয়সের কিশোররা। তারা প্রকাশ্যে দিনের আলোয় করছে ছিনতাই, রাতের আঁধারে তো আছেই।
ছিনতাইকারীদের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে আবার তাদের আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে অনেকে। তাদের কবল থেকে রেহায় পাচ্ছে না কেউ। ছিনতাইকারী চক্র যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে আতঙ্কে রয়েছেন যানবাহনের চালকসহ পথচারীরা।গোপন সূত্রে জানা গেছে, গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে কাওছার(২৬) দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত।
এই চক্রের সেল্টারদাতা কাউছারের চাচা মাদক বিক্রেতা ফারুক। ছিনতাইকারী কাউছার বার বার পুলিশের কাছে ধরা পড়লে তাকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনেন ফারুক। গত (২৯ মার্চ) সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে গোলাকান্দাইল এলাকায় এই ছিনতাইকারী কাউছার চক্রের খপ্পরে পড়েন রূপগঞ্জ উপজেলার হাটাব এলাকাস্থ প্রাণ.আর.এফ.এল কোম্পানীর দুই এস.আর।
তারা বাইসাইকেলযোগে গোলাকান্দাইল এলাকা থেকে মালের অর্ডার কেটে ও বকেয়া টাকা কালেকশন করে গাউছিয়া থেকে ডিলার পয়েন্টে যাওয়ার পথে গাউছিয়া মার্কেটস্থ ফ্লাইওভারের মাঝখানে ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ দুই স্মার্ট ফোন ও ১টি বাটন মোবাইল নিয়ে প্রাণ.আর.এফ.এল কোম্পানীর এক এস.আরকে ছিনতাইকারীরা স্বজোড়ে ঘুষি মেরে রক্তাক্ত জখম করে ও ধাঁরালো ছোরা দিয়ে হাতে আঘাত করে।
এ বিষয়ে তারা রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেন। এছাড়া গত মঙ্গলবার (১৩এপ্রিল) রাত ১২ টার দিকে গোলাকান্দাইল আল-রাফি হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক আহম্মেদ ফয়সাল হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স পার্কিং করে নিজের মোটরসাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল-৪৩-৬৯৮৭) যোগে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার গোলাকান্দাইল ব্রিজের সামনে পাকা রাস্তায় পিছন দিক থেকে একটি নীল রংয়ের মোটর সাইকেলযোগে কাউছার মিয়া (২৬) নামে এক ছিনতাইকারী অজ্ঞাত আরো দুইজন ছিনতাইকারী নিয়ে তার পথরোধ করে এবং তাকে এলোপাথারীভাবে মারপিট করতে শুরু করে।
এক পর্যায়ে ধারালো ছোরা বের করে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে বলে যা আছে সব দে। ছিনতাইকারী কাউছার হলেন উপজেলার গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া এলাকার হারুন মিয়ার ছেলে। এসময় ছিনতাইকারীরা ফারুক আহম্মেদ ফয়সালের কাছ থেকে নগদ টাকাসহ মোটর সাইকেলের যাবতীয় কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে এবং ধারালো ছোরা দিয়ে তার হাতে গুরুতর জখম করে। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার হয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ বিষয়টি তিনি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার তদন্ত (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ছিনতাইকারী কাউছার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে। তারা এখন পলাতক রয়েছে। অতি শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।