চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
শনিবার সকালে উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শ্রমিকরা বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাঁশখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম সমকালকে জানান, বেতন-ভাতা নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলছিল। সকালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশ তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। শ্রমিকদের হামলায় পুলিশের চার সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে চারজন নিহত হয়। তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গার রনি, কিশোরগঞ্জের মো. রাহাদ, নরসিংদীর শুভ ও বাঁশখালীর মাহমুদ রেজা।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফয়সাল করিম জানান, আহতদের হাসপাতালে আনার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম রায়হান, বাড়ি নোয়াখালী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুলি চালায় পুলিশ। এতে চারজন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ২৫ জন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভেতর আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল একই বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়।
গণ্ডামারার বড়ঘোনায় চায়না সেফকো কোম্পানির উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। ৬০০ একর জমির ওপর স্থাপিত এ প্রকল্পে খরচ হবে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
২০১৬ সালের এপ্রিলে সংঘর্ষের আগে বিদ্যুকেন্দ্রটির ভূমি অধিগ্রহণ চলছিল। তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ছিল অসন্তোষ। তাদের অভিযোগ ছিল, পুনর্বাসনের সুযোগ না দিয়ে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হলে ইউনিয়নের লবণ ও চিংড়ি চাষে জড়িতরা বেকার হয়ে পড়বেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।