মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জে নার্সারীতে বদলে গেছে সাইদুল ইসলাম নামের এক যুবকের জীবন চিত্র। ওই যুবক তার নার্সারীতে দেশি-বিদেশী বিভিন্ন জাতের ফুল, ফল, কাঠ ও ঔষধী গাছ উৎপাদন করে এবং স্বল্প মূল্যে তা বিক্রি করে প্রতিবছর আয় করেন ৮ থেকে ১০লাখ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের যুবক সাইদুল ইসলাম এক সময় ছিলেন খুবই দরিদ্র। জেলার বিভিন্ন জায়গায় চাষ করা ফসলি জমি থেকে কাঁচা মাল সংগ্রহ করে বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে বিক্রি করতো বেকার যুবক সাইদুল ইসলাম।
কিন্তু কাঁচামাল বিক্রির টাকা দিয়ে সংসার চলতো না। অভাবের কারণে তার ৪ ছেলে মেয়েকে পড়ালেখা করাতে গিয়ে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে। কেউ বাড়ায়নি সহযোগীতার হাত। অবশেষে কোন উপায় না পেয়ে প্রতিবেশীর কাছ থেকে ৫হাজার টাকা ঋন নিয়ে নিজ বসতবাড়ির ১৫ শতাংশ
জায়গার মাঝে তৈরি করে একটি ছোট নার্সারী। প্রথমে দেশীয় জাতের বিভিন্ন গাছের চাঁরা উৎপাদন শুরু করে। তবে সাইদুল ইসলামের নার্সারীতে উৎপাদিত গাছের চাঁরা উন্নত মানের হওয়ার কারণে তাহিরপুর উপজেলাসহ সারা জেলায় তার সুনাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দিনদিন বাড়তে থাকে
তার উৎপাদিত গাছের চাঁরার চাহিদা। তাই সাইদুল ইসলাম একে একে গড়ে তোলে আরো ২টি নতুন নার্সারী। বর্তমানে কামড়াবন্দ গ্রামে ২টি ও বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে ১টি সহ মোট ৩টি নার্সারী রয়েছে সাইদুল ইসলামের। তার এসব নার্সারীতে প্রায় শতাধিক প্রজাতির দেশী
বিদেশী লক্ষাধিক গাছের চাঁরা রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বলে জানা গেছে।
এব্যাপারে সফল যুবক সাইদুল ইসলাম বলেন- জেলা ও উপজেলা কৃষি অফিসসহ ঢাকা থেকে আমি একাধিক প্রশংসা ও সনদপত্রসহ পুরস্কার পেয়েছি। এই অর্জন গুলো আমার দীর্ঘ সাধনার
ফল। এই নার্সারী দিয়ে আজ আমি স্বাবলম্বী। আগে কুড়েরঘরে থাকতাম। এখন পাকা বাড়িতে বসবাস করি। ছেলে মেয়েদেরকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। তাই আমি চাই, দেশে যত বেকার যুবকরা
আছে, তারা যেন অযথা সময় নষ্ঠ না করে। সবই যেন আমার মতো কিছু একটা করে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে।