সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্তে ৩টি শুল্কস্টেশন থাকার পরও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একাধিক মামলার আসামীরা ভারত থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা ও পাথরসহ পান-সুপারী, বিড়ি, চিনি,
কাঠ ও ছাগল পাচাঁরের পাশাপাশি মদ-গাঁজা, ইয়াবা ও অস্ত্র পাচাঁর করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আজ শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে পৃথক অভিযান চালিয়ে ২টি ছাগলসহ চোরাই কয়লা জব্দ করেছে বিজিবি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- প্রতিদিনের মতো গতকাল শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাত ১২টার পর থেকে উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী রফ মিয়া, রিপন মিয়া ও
লেংড়া জামালগং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে ৫০মেঃটন কয়লা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে বিভিন্ন বাড়িঘরের ভিতরে লুকিয়ে রাখে।
এরপর আজ শনিবার (২৫ মার্চ) ভোরে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লা লড়ি বোঝাই করে পাশর্^বর্তী কলাগাঁও পাথরঘাট নামকস্থানে নিয়ে ছোট নৌকায় বোঝাই করে সমসার হাওরের বাঁধের পাশে নিয়ে যায়।
তারপর পাটলাই নদীতে বড় ইঞ্জিনের নৌকায় ৩৫মে.টন চোরাই কয়লা বোঝাই করে নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা থানার সামনে অবস্থিত মনতলা নামকস্থানে নিয়ে ডিপুতে বিক্রি
করে। এখবর পেয়ে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ৪০কেজি ওজনের ৫বস্তা চোরাই কয়লা জব্দ করে। এরআগে চোরাকারবারী রফ মিয়া ও তার বাহিনী ভারত থেকে ছাগল পাচাঁর করার সময় ২টি ছাগল জব্দ করা হয়।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে- গত বুধবার (১৫ মার্চ) রাত ১২টায় একই সীমান্তের লালঘাট বড় মসজিদের সামনে অবস্থিত সমসার হাওর পাড়ের নালা দিয়ে ৩টি বারকি নৌকা বোঝাই করে ভারত
থেকে পাচাঁরকৃত ২৫মেঃটন চুরাই কয়লা ও বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য প্লাষ্টিকের বস্তা ভর্তি করে পাশর্^বতী বালিয়াঘাট সীমান্তের বোরাঘাট গ্রাম সংলগ্ন পাটলাই নদীতে নিয়ে বড় ইঞ্জিনের নৌকা
বোঝাই করে একাধিক চোরাচালান মামলার আসামী চোরাকারবারী খোকন মিয়া,মানিক মিয়া ও তার বাহিনী। এরআগে গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাত ২টায় একই সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি ও মাইজহাটি
এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী রফ মিয়া, রিপন মিয়া, লেংড়া জামালগং প্রায় ৭৫মেঃটন চোরাই কয়লা ও মদ পাচাঁর করে নিয়ে যায়। তার আগে গত সোমবার (১৩ মার্চ) রাত ১টায় লালঘাট থেকে একই
ভাবে ১৮ মেঃটন চোরাই কয়লা ভারত থেকে পাচাঁর করে চোরাকারবারী খোকন মিয়া, মানিক মিয়াগং। এসব চোরাকারবারীদের অনেকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। তাই সীমান্ত
চোরাচালান বন্ধ করার জন্য চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশ ও র্যাব বাহিনীর সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীসহ সচেতন এলাকাবাসী।
এব্যাপারে চারাগাঁও ক্যাম্প কমান্ডার পন্ডিত বলেন- কয়লা পাচাঁরের খরব পেয়ে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে ২টি ছাগলসহ ৫বস্তা চোরাই কয়লা জব্দ করেছি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করতে
পারিনি। তবে এলাকাবাসীর সহযোগীতা পেলে চোরাকারবারী রফ মিয়া ও তার বাহিনীকে গ্রেফতার করে চোরাচালান বন্ধ করতে সক্ষম হব।