ঢাকার রাস্তায় নামলে মনে হবে না সর্বাত্মক লকডাউনের আজ ষষ্ঠ দিন। বিগত দিনগুলোতে শুধু সকাল বেলা অফিসগামী যাত্রীদের চাপ থাকলেও মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সড়কগুলোতে গণপরিবহন বাদে প্রায় সব ধরনের পরিবহন চলাচল করেছে। প্রাইভেটকার, ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক ও রিকশার আধিক্য বেশি ছিলো। এদিকে দুপুর থেকে ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর চেকপোস্টে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের নিস্ক্রিয় ভূমিকায় থাকতেও দেখা গেছে। কোন ধরনের চেকিং ছাড়াই নগরবাসী চলাচল করছিলো।
এদিন বেলা ১২টা থেকে বসিলা, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, সংসদ ভবন এলাকা, বিজয় সরণি, মহাখালী ও বনানী এলাকাসহ তিব্বত, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ, কাঁটাবন, সাইন্সল্যাব, ধানমন্ডি এলাকা সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
গণপরিবহন বাদে প্রায় সব ধরনের পরিবহন চলছে ঢাকার রাস্তায়। রাজধানীর চেকপোস্টগুলোতে সক্রিয় ছিলো না পুলিশ। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে স্থায়ী চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বিগত দিনগুলোর মতো সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি অন্যান্য দিনের মতো মোটরবাইক আটকে জরিমানা বা মামলা দিতেও। এমন নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ সদস্য জানিয়েছেন, তীব্র রোদ, গরম আর রমজানের ক্লান্তিতেই অনেকটা বাধ্য হয়ে তৎপরতা কমানো হয়েছে। রোদ থেকে বাঁচতে বেশিরভাগ সময় চেকপোস্ট সংলগ্ন ছায়া হয় এমন জায়গায় সময় অতিবাহিত করছে।
শপিংমলগুলো বন্ধ, বাজারে ভিড়: নগরীর সব ধরনের শপিংমলগুলো বন্ধ থাকলেও অন্যান্য বাজারগুলোতে ছিলো মানুষের ভিড়। রমজানকে কেন্দ্র করে এসব বাজারে ক্রেতা বিক্রেতাদের ব্যস্ত সময়ই পার করতে গেছে। কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের একাধিক দোকানির সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত রমজান কেন্দ্রিক কেনাকাটা করতেই আসছেন ক্রেতারা। অন্যান্য দিনের থেকে আজ ক্রেতা সমাগম খানিকটা বেশি।
চলছে ভাড়ায় চালিত মোটরবাইক: বাহিরে লোক সমাগম বাড়ায় সকাল থেকেই ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাড়ায় যাত্রীটানা মোটরবাইক চালকেরা। সাইন্সল্যাব মোড়ে ইফাত সরদার নামে এক বাইক চালকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আজ রাস্তায় মানুষ বেশি। অন্যান্য দিনের থেকে আজ বেশি ট্রিপ হয়েছে। অন্যান্য দিন পুলিশ চেকিংয়ের ভয় থাকলেও আজ সেরকম কড়াকড়ির মধ্যে পড়তে হয়নি।
ধানমন্ডি-১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় রিকশাচালক আকতার হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, অন্যান্য দিনের থেকে আজ বাহিরে মানুষ বেশি। লোকজন বাইরে চলাচল করতে শুরু করেছে। তবে অল্প সময়ের মধ্যে রাস্তা ঘাটে হাসপাতালগামী বেশ কয়েকজন রোগীও তিনি দেখেছেন বলে জানান। এখনো অনেকেই জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না বলেও মনে করেন এই রিকশা চালক।
এদিকে মহাখালী ও বনানী এলাকায় সব থেকে বেশি দেখা গেছে প্রাইভেটকার। সেই সাথে পায়ে হেটে চলা মানুষের উপিস্থিতিও ছিলো উল্লেখযোগ্য।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১৩ তারিখ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সর্বাত্মক লকডাউন জারি করা হয়েছে। প্রথম দফার সর্বাত্মক লকডাউনের ষষ্ঠ দিন আজ। সাতদিনের এই লকডাউনের এক দিন বাকি থাকতেই ২২ তারিখ থেকে আরও সাতদিন লকডাউন বর্ধিত করে প্রজ্ঞাপণ দেওয়া হয়েছে আজ।
সূত্র-বার্তা২৪