নেত্রকোণা প্রতিনিধিঃ নেত্রকোণায় জুয়ার আসর পরিচালনার অপরাধে এক সাবেক সেনা সদস্যসহ দুজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ অভিযান পরিচালনার সময়ে নগদ পাঁচ হাজার চারশো টাকা, আট সেট তাস ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করে সেনা সদস্যরা। আটককৃতরা হলেন- পৌরশহরের সাতপাই চক্ষু হাসপাতাল
সংলগ্ন মৃত মোসলিম উদ্দিনের ছেলে অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য এসএম মোসেক কাক্কা বুলবুল এবং জুয়ার আসর পরিচালনায় আটক আরেকজন পৌরশহরের খতিব নগুয়া এলাকার মৃত ওয়াজেদ আলীর ছেলে মো. আলামিন (৪৫)।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে আটক দুজনকে নেত্রকোণা মডেল থানা পুলিশে কাছে হস্তান্তর করেছে সেনাবাহিনী। একই দিন রাত ৯টার দিকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেজর জিসানুল হায়দার। তিনি সেনাবাহিনীর ১৯ পদাতিক ডিভিশনের ৭৭ ব্রিগেডের আওতাধীন ৮ম ইস্ট বেঙ্গল
রেজিমেন্টের নেত্রকোণা জেলায় দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তা। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নেত্রকোণা সেনা ক্যাম্পের সার্জেন্ট মোত্তাহিরুলের নেতৃত্বে টহল দল পৌরশহরের মেছুয়া বাজার কাঁচামালের আড়তের ২য় তলায় অভিযান পরিচালনা করেন। জুয়ার আসর
পরিচালনার অপরাধে তাদেরকে আটক করে টহল দলটি। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়। তারা দীর্ঘদিন যাবত জোয়ার আসর পরিচালনা করে আসছিলেন। পরবর্তীতে রবিবার (১৭ নভেম্বর) পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রমাণসহ তাদেরকে সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটককৃত দুজনের
বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসএম মোসেক কাক্কা বুলবুল নেত্রকোণা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড কমিশনার মহসিন আলম এবং সময় টেলিভিশন ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি আলপনা বেগমের ভাই।
নেত্রকোণা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ সেনাবাহিনী কর্তৃক আটক দুজনকে হস্তান্তরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু শেষে আগামীকাল (১৮ নভেম্বর) দুপুরের দিকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। এদিকে স্থানীয়দের ধারনা, ভাই ও বোনের প্রভাব এবং তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘদিন
ধরে দিনে-দুপুরে শহরের মাঝখান মেছুয়া বাজার কাঁচামালের আড়তের ২য় তলায় জুয়ার আসর পরিচালনা হয়ে আসছিল। এ আসরে শহরের প্রভাবশালীদের আনাগোনা দেখতে পান আশপাশের লোকজন। কিন্তু দীর্ঘদিন জুয়ার আসরের স্থানটি সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নিরব ভূমিকা পালন করেছে। অবশেষে
সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও প্রচেষ্টায় জুয়ার আসর পরিচালনার অপরাধে দুজনকে আটক করতে সক্ষম হন সেনা সদস্যরা এবং জনমনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।