সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশায় জুয়া খেলার আসর বসাতে বাঁধা দেয়ায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিল্লাল হোসেনের নির্দেশে সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন (২৯) নামের স্থানীয় এক সাংবাদিকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ।
এ ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (২৫এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের আতকাপাড়া খেয়াঘাট এলাকায়। আহত সাংবাদিক দৈনক ভোরের দর্পন পত্রিকার সুনামগঞ্জ হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি। এবং উপজেলার আকতাপাড়া গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিক বাদী হয়ে গতকাল ২৫ এপ্রিল রবিবার বিকেলে চারজনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানার ওসির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আহত সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
থানা পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেনের সাথে আতকাপাড়া গ্রামে হযরত মজনু শাহ নূরী ওরফে ন্যাংটা বাবার মাজারে বাৎসরিক ওরস অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গত ২৪ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাণিজ্য মেলার নামে জুয়া ও অন্যান্য অসামাজিক কার্যক্রমের প্রস্তুতি নিচ্ছিল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ও তাঁর ভাই সুরে আলমসহ তার অনুসারীরা। কিন্তু সারাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাবের কারণে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এবার মাজারে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওরস অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু ওরস না হওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন সাংবাদিক সাদ্দামকে দোষারোপ করে আসছিল।
এরই জের ধরে গত বেশ কয়েকদিন যাবৎ ভাইস চেয়ারম্যান ও তাঁর লোকজন সাংবাদিক সাদ্দামকে মারধর করা সহ রাস্তাঘাটে পেলে মেরে ফেলের হুমকি দিয়ে আসছিল। পরে এই বিষয়টি নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করার জন্য গত শনিবার (২৪এপ্রিল) থানায় লিখিত অভিযোগ করে সাদ্দাম । আর এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনে ও তার লোকজন। গত ২৫ এপ্রিল আকতাপাড়া খেয়াঘাট এলাকায় সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেনকে একা পেয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেনেট নির্দেশে তাঁর লোকজন আমাকে লোহার রড ও হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র তার উপর আক্রমণ করে মারধর করে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যাওয়া। পরে তার পরিবারের লোকজনের খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তী করে।
সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেনের বাবা আবদুল বারেক (৬৫) বলেন, আমার ছেলেকে এভাবে হাতুপেটা ও কিলঘুষি মেরে আহত করায় এই ঘটনার সুবিচার চাই।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন আমার ফুফাতো ভাই। তাঁর নানাবিদ কার্যক্রমে ও ব্যবহারে এলাকার মানুষজন ওর প্রতি চরম অসন্তুষ্ঠ। তাঁর সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। বেশ কিছুদিন ধরে সে মানসিকভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। হাতুড়ি পেটার কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুনেছি, আমার ছোট ভাই সুরে আলমের সঙ্গে ওর কিল ঘুষাঘুষি হয়েছে। বিষয়টি আমি দুজনকে নিয়ে বসে মিটমাট করে দেব।
ধর্মপাশা থানার ওসি মো.খালেদ চৌধুরী বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।