পাবনার চাটমোহরে চৈত্রের তাপদাহ বেড়েছে। গরমে হাসফাঁস করছে মানুষ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের তাপ বেড়ে যাওয়ায় রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়ছে। বৃষ্টির দেখা নেই। তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে গেছে। হস্তচালিত অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। এদিকে তাপদাহের কারণে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। প্রয়োজনীয় পানির অভাবে বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকরা জানায়, ১০০ থেকে ১২০ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়েও মিলছে না পানি। পানির স্তর নাগালে পেতে অনেকে ৫-৭ ফুট পর্যন্ত মাটি গর্ত করে সেখানে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শুকিয়ে যাওয়া গুমানী,চিকনাই ও বড়াল নদীর তলদেশে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পানি না পেলে বোরো উৎপাদন হ্রাস পাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার নিমাইচড়া, হান্ডিয়াল ও হরিপুর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে বোরো আবাদের জমিতে দেখা যায়,অনেক বোরো চাষি গভীর নলকূপ স্থাপনের পরও জমিতে সেচ কাজে আশানুরূপ পানি পাচ্ছেন না। তারা গর্তের মধ্যে মেশিন বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার নদীতে পাইপ স্থাপন করে পানি তুলছেন। শুধু ফসলের মাঠে নয়,নলকূপ দিয়ে পানি পেতে সমস্যা হচ্ছে। অকেজো হয়ে পড়েছে অনেক হস্তচালিত নলকূপ।
ভুক্তভোগী বোরো চাষিরা বলেন, ১০০-১২০ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়েও সেচ কাজের জন্য ঠিক মতো পানি পাওয়া যাচ্ছে না। শ্যালো মেশিনে পানি কম ওঠায় বোরো চাষাবাদে জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে। সেচ কাজে সময় বেশি লাগছে। বসতবাড়িতে পানি সমস্যায় নলকূপ আলাদা-আলাদা স্থানে স্থাপন করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
উপজেলা বিএডিসির পানাসি প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব মো. ফারুক আহমেদ বলেন, সাধারণত ১০০-১২০ ফিট গভীর পর্যন্ত পাইপ বসালে সেচের পানি পাওয়া যায়। তবে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বর্তমানে এ গভীরতায় সেচের জন্য প্রয়োজনীয় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আরো নিচে নেমে যেতে পারে। তিনি জানান,অনেকেই ৫/৬ ফুট গর্ত করে সেচযন্ত্র বসিয়েছে। বৃষ্টি হলেই পানির লেয়ার স্বাভাবিক হবে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন জানান,হস্তচালিত অধিকাংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। সাব মারসিবল বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এ মাসুমবিল্লাহ বলেন,চলনবিলের নদী, ডোবা, নালা ও খালে পানি থাকলে বোরো চাষিদের সেচ কাজে অসুবিধা হতো না। বৃষ্টি হলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা ওপরে উঠবে। নয়তো বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে পানির স্তর বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এতে বোরো ধানের ফলনে প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া বৃষ্পিাত না হওয়ায় গাছে গাছে যে আমের গুটি এসেছে,তা ঝরে পড়ছে।