মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া- সুনামগঞ্জ জেলার ছোট-বড় হাওরগুলো চলছে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ নিধনের উৎসব। আর এই পোনা মাছ নিধনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে মশারীর জাল, কোনাজাল, কারেন্ট জালসহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ ও জাল।
বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে এজেলার বিভিন্ন হাওর থেকে টাকি, শোল, কই, গইন্না ও রুই মাছের পোনাসহ আরো বিভিন্ন প্রকার পোনামাছ নিধন করা হলেও এব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা মৎস্য বিভাগ।
খোজ নিয়ে জানা গেছে- জেলার ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, বিশ^ম্ভরপুর, তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার চারদিকে এখন অথৈ পানি থৈথৈ করছে।
বর্ষাকাল আসলেই এসর উপজেলার ছোট বড় সব হাওর ও বিল পানিতে ডুবে যায়। এসময় বিভিন্ন প্রকার মাছের প্রজনন হয়। কিন্তু একটি চক্র তাদের রসনা বিলাসের জন্য ও অমৎসজীবিরা অধিক মোনাফার লাভের আশায় রামসা প্রকল্পের
টাঙ্গুয়ার হাওর, শনির হাওর, মাতিয়ান হাওর, লোভার হাওর, হালির হাওরসহ জেলার ছোট-বড় হাওর ও বিলগুলোতে দিনরাত অবাধে পোনা মাছ নিধন করে চলেছে। কিন্তু এসব দেখার কেউ নাই।
সম্প্রতি কয়েক দফা পাহাড়ী ঢলের পানিতে হাওর এলাকার মৎস্য চাষীদের অনেক পুকুর পানিতে ডুবে যায়। এর ফলে তাদের মাছও পানিতে ভেসে হাওরে চলে যায়।
আর সপ্তাহ খানেক যাবত হাওর এলাকা গুলোতে ভেসে বেড়ানো বিভিন্ন প্রকার পোনামাছ নিধন বেড়ে গেছে। পোনা মাছ ধরার পর শিকারীরা হাট-বাজারে নেওয়ার আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
কারণ এলাকার সচ্ছল ব্যক্তিরা পোনা মাছ খেতে খুবই পছন্দ করেন। সেজন্য শিকারীদেরকে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন তাদেরকে পোনা মাছ দেওয়ার জন্য। এজন্য বর্তমানে হাওর এলাকা গুলোতে বড় মাছের চেয়ে পোনা মাছে দাম খুব বেশি।
এব্যাপারে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার প্রবীণ মৎসজীবী সুধীর দাস, মোহন দাস, রবি দাসসহ অনেকেই বলেন- বর্ষাকালে হাওরের পানিতে পোনা মাছের বিস্তার গঠে। এই পোনা মাছ রক্ষা করতে পারলে মাছের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে। তাই বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে পোনা মাছ নিধন বন্ধ করা জরুরী প্রয়োজন।
জেলা মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি আলাউর রহমান বলেন- এক শ্রেণীর অমৎস্যজীবিরা বিভিন্ন প্রকার জাল দিয়ে হাওরে অবাধে পোনা মাছ নিধন করছে। কিন্তু মৎস্য বিভাগ এব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা। এভাবে পোনামাছ নিধন করলে মাছের বংশ অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সীমা রানী বিশ^াস সাংবাদিকদের বলেন- করোনার জন্য হাওর, বিল ও হাট-বাজারে পোনা মাছ নিধন প্রতিরোধ অভিযান বন্ধ ছিল। আমরা শীগ্রই মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে পোনা মাছ নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।