তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ।
মিলছেনা সূর্যের দেখা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে রাত শুরুর পরই জেলা জুড়ে নামছে শীতের পারদ। রাত জুড়েই ঝরছে টিপটাপ বৃষ্টির মতই শীত। ঘন কুয়াশায় হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
ক্রমশঃ কমে আসছে তাপমাত্রা। আজ সকালে কুড়িগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।
এতে করে জেলা জুড়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। শীত ও কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন খেটেখাওয়া, দিনমজুর সহ নিম্ন আয়ের মানুষজন। শীত বস্ত্রের অভাবে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়ছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চর ও দ্বীপ চরের মানুষ সহ শিশু ও বৃদ্ধরা।
খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন চরাঞ্চলের মানুষজন। শীতে গবাদি পশুগুলিকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। শীতের কারণে কাজে যোগ দিতে ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবীরা পড়েছেন বিপাকে।
সকাল থেকেই কাজের সন্ধানে শহরমুখী রিকশা শ্রমিক, ভ্যান শ্রমিক, ঘোড়ার গাড়ি চালক, দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করেই দূর্ভোগ নিয়েই শহরে আসতে দেখা গেছে।
শীত বস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চরাঞ্চল সহ বাঁধ সমুহে আশ্রয় নেয়া মানুষজন।
এদিকে কনকনে ঠান্ডা ও হিমেল হাওয়ায় কাপছে চরাঞ্চল সহ ও বাধে বসবাসরত মানুষজন। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষেরই নেই গরম কাপড়।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, ডিসি স্যার দুই শতাধিক কম্বল ইউনিয়নের পোড়ার চর এলাকায় সাম্প্রতিক বিতরণ করেছেন। আমার ইউনিয়নে অগনিত চর ও দ্বীপ চর রয়েছে। অধিকাংশ মানুষই খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের।
এসব মানুষের শীত বস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। এসব চরের শীত বস্ত্রের অভাবে নিদারুন কষ্টে আছে। আমি এখন পর্যন্ত কোন শীত বস্ত্র সহায়তা না পাওয়া এসব অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ করতে পারিনি।
পাঁচগাছি ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকাই চর। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের। শীতে খড়কুটো ও রোদের উপর নির্ভরশীল এসব এলাকার মানুষ।
কিন্তু সকাল থেকেই সূর্যের দেখা না মেলায় বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। গরম কাপড় না থাকায় অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। আমি এসব অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারি ও বেসরকারি সহায়তার আকুতি জানাচ্ছি।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সরকার জানান, সরকারিভাবে জেলার নয়টি উপজেলার জন্য বরাদ্দের ৩৫ হাজার ৭শ কম্বল ও ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বিতরণ চলমান রয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সংগঠন মুসলিম এইড ২ হাজার ৭শ কম্বল বিতরণ করবে বলে জানতে পেরেছি।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কুড়িগ্রাম জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। এতে করে তাপমাত্রা ক্রমশঃ কমে আসছে। জেলা জুড়ে চলছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ।