সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্ত দিয়ে লাখলাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আজ রবিবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৬টা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় দেড় হাজার মেঃটন কয়লা ও চুনাপাথরসহ চিনি, সুপারী, মাদকদ্রব্য পাচাঁর করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানায়- গতকাল শনিবার (১২ আগস্ট) রাত ১০টার পর থেকে এই সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি, রন্দু ছড়া, লামাকাটা, কলাগাঁও নদী, বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে ভারত থেকে একযোগে
কয়লা, চুনাপাথর ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর শুরু করে চিহ্নিত চোরাকারবারীরা। এছাড়াও হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বাংলা কয়লাও নিয়ে যায়। এরআগে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ভোর ৫টায় এই সীমান্ত থেকে ৯টি ইঞ্জিনের নৌকা
বোঝাই করে প্রায় ২শ মেঃটন, গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাত ১১টা থেকে বুধবার (৯ আগস্ট) ভোর ৫টায় পর্যন্ত ৫২টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ৯শ মেঃটন, গত সোমবার (৭ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ভোর
৫টা পর্যন্ত ৬৮টি ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে প্রায় ১২শ মেঃটন কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করা হয়েছে।
এব্যাপারে শুল্কস্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ী ফজলু সরদার বলেন- চোরাচালানের কারণে আমরা বৈধ কয়লা ও চুনাপাথর
বিক্রি করতে পারছিনা। কারণ সরকারের রাজস্ব দিয়ে ভারত থেকে প্রতিটন কয়লা ২০হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করি, সেই কয়লা পাচাঁর করে ১৪হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এজন্য পাচাঁরকৃত মালামাল থেকে উঠানো হয় চাঁদা। তাই এব্যাপারে
কেউ পদক্ষেপ নেয়না। ব্যবসায়ী ডাঃ হারুন বলেন- আমাদের ব্যবসা প্রায় বন্ধের পথে। চোরাচালানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে নানান ঝামেলায় পড়তে হয়। জঙ্গলবাড়ি গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী তোতা মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন- একাধিক
চোরাচালান মামলার আসামী জঙ্গলবাড়ি গ্রামের লেংড়া জামাল, হযরত আলী, আইনাল মিয়া, কলাগাঁও গ্রামের রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, বাঁশতলা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বাবলু, সুলতান মিয়া ও লালঘাট গ্রামের রুবেল মিয়া, খোকন
মিয়াগং প্রতিদিন ভারত থেকে কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করে ইঞ্জিনের নৌকায় বোঝাই করে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা নিয়ে যায় এবং প্রতিনৌকা (২০মেঃটন কয়লা ও চুনাপাথর) থেকে পুলিশ, বিজিবি ও সাংবাদিকদের নাম
ভাংগিয়ে ৪৫হাজার টাকা করে চাঁদা নেয়। উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি শেখ মোস্তফা বলেন- লাখলাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে দীর্ঘদিন যাবত বাংলা কয়লা ও চোরাই কয়লা পাচাঁর করা হলেও দেখার কেউ নাই।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ ২৮ ব্যাটালিয়নের চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মোতালিব খান বলেন- আমাদের কোন সোর্স নাই। কে কি করছে তা জানিনা, চারদিকে পানি থাকার কারণে চোরাকারবারীদের ধরতে পারিনা।