মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
spot_img
Homeআইন-অপরাধশেরপুরে দ্রুত বিচার আইনের মামলায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে কারাগারে প্রেরণ।

শেরপুরে দ্রুত বিচার আইনের মামলায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে কারাগারে প্রেরণ।

মোহাম্মদ দুদু মল্লিক,শেরপুর ব্যুরো। শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে মার্কেট ভেঙে মূল্যবান জায়গা-জমি দখলের অভিযোগে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনের

মামলায় শ্রীবরদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল মো.আমিনুল ইসলাম (৭০) কে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।১২ মে রবিবার বিকেলে শ্রীবরর্দীতে এই ঘটনা করেন।

এই অপরাধে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো.আলমগীর মাহমুদ উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানী পর তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলা

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।একইসাথে আদালত মামলায় মো.ফারুক মিয়াসহ অপর ১৫ জনকে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন। অন্যদিকে জামিন নাকচের পর আমিনুল ইসলাম আদালতের

বিচারকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে নানা অবমাননাকর মন্তব্য করেন।আদালত সূত্র জানাযায়,শ্রীবরদী উপজেলার গোশাইপুর ইউনিয়নের মাটিয়াকুড়া গাবতলি বাজারে স্থানীয় মৃত আব্দুস ছাত্তারের ছেলে আবুল হাসেম ১৪

রুমবিশিষ্ট একটি টিন শেড বিল্ডিং মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছিলেন। ওই অবস্থায় এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ওই মার্কেটের সাথে থাকা এক খণ্ড জায়গা ক্রয়ের প্রস্তাব দিলে আবুল

হাসেম তাতে রাজি না হলে তার সাথে শত্রুতা সৃষ্টি হয়।এক পর্যায়ে এলাকাবাসী ও নিজস্ব লোকজন দিয়ে ফুসলিয়ে আমিনুল ইসলাম ওই মার্কেটের পাশ দিয়ে পার্শ্ববর্তী খলশেকুড়ি বিলে যাতায়াতের জন্য রাস্তা দাবি

করেন। তাতেও সে রাজি না হলে গত বছরের ২৯ এপ্রিল সকালে প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন নিয়ে আবুল হাসেমের মার্কেটের ভাড়ায় চালিত একপাশের অংশ ভেঙে মালামাল লুটসহ প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন

ও ৩ ফুট জায়গা নিশ্চিহ্ন করে।সেইসাথে মার্কেট সংলগ্ন আবাদি ভূমি হতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের ১৫ শতাংশ জমিতে মাটি,ইটের সুরকি ও ইট ফেলে জবর দখলমূলে রাস্তা নির্মাণ করে ফেলে। এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি

করে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ওই ভাঙচুর ও দখলের উৎসব চললেও আবুল হাসেম ও তার পরিবারের আকুতিতে এগিয়ে যায়নি কেউ।ওই ঘটনায় আবুল হাসেম বাদী হয়ে গত বছরের ২ মে আমিনুল ইসলাম সহ ১৬ জনকে

স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ জনকে আসামি করে শেরপুরের আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। প্রথমত থানা পুলিশের তদন্তে ঘটনার সত্যতা না পাওয়ার কথা বলা হলেও পরবর্তীতে বাদীপক্ষের নারাজীমূলে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে জামালপুরের পিবিআই।

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে ঘটনার সত্যতা।আদালতে জামিন নামঞ্জুরের পর মামলার বাদী আবুল হাসেম তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন,মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে মাইকে ঘোষণা দিয়ে

প্রকাশ্য দিবালোকে ত্রাস সৃষ্টি করে আমার মার্কেট ভাঙচুর ও দখলসহ মূলবান জায়গাজমি দখলকালে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের কাছে দৌড়েও কোন সহায়তা পাইনি। পরবর্তীতে আদালতে মামলা করলে উল্টো আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর চেষ্টা করেছে আসামিরাই।

তিনি ওই ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করে বলেন, বিলম্বে হলেও আজ স্বস্তি পেয়েছি। মনে শান্তি লাগছে। মহান আল্লাহতালার নিকট লাখো কোটি শুকরিয়া!!অন্যদিকে আদালতের হাজতখানা থেকে মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম দাবি করেন, রাস্তার জন্য জায়গা চাওয়ার পর না পেয়ে জনস্বার্থে বাদীর কিছু জায়গা দিয়ে রাস্তা করেছি। ব্যক্তিগত লাভবান হওয়ার জন্য আমি কিছু করিনাই।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ