মোঃ জাহাঙ্গীর আলম নোয়াখালী প্রতিনিধি,২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট ও ক্রস ফায়ারে হুমকি দিয়ে আটক নেতার
নিকট থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে সেনবাগ থানার সাবেক ওসি মিজানুর রহমান ,সেনবাগ পৌরসভার মেয়র আবু নাছের ভিপি দুলাল, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম কবির, উপজেলা
ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারী মাজেদুল হক তানভীর, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বাবু, সেনবাগ পৌরসভা যুবলীগ আহবায়ক জাহিদুল হক রিপন, আরিফ হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা আবু শোয়েব,
তারেক,যুবলগী নেতা আবদুল আহাদ পুলার, ইউসুফ, মাসুদ, জুয়েল, আশরাফুল আলম রানা, আরেফিন, রাব্বি,রায়হান সহ ১৮ নেতাকর্মী নাম উল্লিখ্য সহ অজ্ঞাত আরো ২৪/২৫ জনের নামে সেনবাগ থানায় মামলা
দায়ের করেছেন বিএনপি নেতা মোঃ নুরনবী বাচ্চু। মামলা নং ৪ তারিখ ১৮/০৮/২৪ ইং। মামলার বিষয়টি
নিশ্চিত করেন থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নাজিম উদ্দিন।মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় বিগত
২০১৮ইং সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী জয়নুল আবদিন ফারুকের নির্বাচন পরিচালনাকারী সদস্য মোঃ নুরনবী বাচ্চু অভিযোগে উল্লেখ্য করেন মামলার ৩নং
স্বাক্ষী উক্ত নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মনোনীত ধানেরশীষ মার্কায় প্রার্থী ছিল। ১নং আসামী তৎকালীন সময় সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিল। ১নং আসামী নিজেকে আওয়ামীলীগের
একজন নিবেদিত কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়া ৩নং স্বাক্ষীর কর্মী সমর্থকদেরকে দমন নিপীড়নের উদ্দেশ্যে উক্ত
থানার সকল পুলিশ অফিসার ও কনস্টেবল এবং উল্লেখিত আসামীগণ এবং তাদের দলে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী
ভিড়াইয়া ২০১৮ইং সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনে (সেনবাগ থানা এরিয়া) এক ভয়ঙ্কর পরিবেশ সৃষ্টি করে। উক্ত ১নং আসামী মামলায় উল্লেখিত আসামীগণ সহ আরো অজ্ঞাত নামা ২৪/২৫ জন
আসামীদেরকে তাহার দলে ভিড়াইয়া সেনবাগ এলাকায় বিভিন্ন বাড়ী ঘরে হানা দিয়া ৩নং স্বাক্ষীর কর্মী সমর্থকদের বাড়ী ঘর ভাংচুর করে। ৩নং স্বাক্ষীর কর্মীদেরকে মারধর করে থানায় নিয়া আটক করিয়া মুক্তি পন
আদায় করিয়াছিল। তাহার ভয়ে ৩নং স্বাক্ষীর নেতাকর্মী সমর্থক প্রচার প্রচারণা চালাইতে পারে নাই। ৩নং স্বাক্ষীর নেতাকর্মী যাহারা সক্রীয় ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিয়াছিল তাদের মধ্যে অনেককে ১নং আসামীর নেতৃত্বে
অপরাপর আসামীরা ধরিয়া নিয়া বিভিন্ন মিথ্য মামলা দিয়া কোর্টে চালান দিয়াছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ৮নং স্বাক্ষী কামালকে নির্বাচনের কিছু দিন আগে ১নং আসামী সহ অপরাপর আসামীরা তাহার বাড়ী থেকে ধরিয়া
আনিয়া মিথ্যা মামলায় কোর্টে চালান দিয়াছিল। পরবর্তীতে উক্ত মামলায় সেনবাগ থানা কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করায় ৯নং স্বাক্ষী অব্যাহতি পায়। ১ম ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থানে ১নং আসামীর নেতৃত্বে উল্লেখিত
আসামীগণ অন্যায় অনধিকারে ১/২নং স্বাক্ষীর বাড়ীতে যাইয়া তাদের বসত ঘরের দরজা ভাঙ্গিয়া বসত ঘরে ঢুকিয়া ১/২নং স্বাক্ষীর বসত ঘরে থাকা ফার্ণিচার সহ মূল্যবান সামগ্রী ভাংচুর করিয়া প্রায় ২,০০,০০০/- (দুই
লক্ষ) টাকার ক্ষতি সাধন করে এবং ১নং স্বাক্ষীর আলমারীতে রক্ষিত ইট বিক্রির ১,২০,০০০/- (এক লক্ষ বিশ হাজার) টাকা ১নং আসামী নিয়া যায়। আসামীগণ ১নং স্বাক্ষীকে তাদের ঘরে বেদম মারধর করিয়া কালো কাপড়
দিয়া চোখ বাঁধিয়া অজ্ঞাত স্থানে নিয়া যায়। পরবর্তীতে আমি এজাহারকারী এবং ২নং স্বাক্ষী সেনবাগ থানায় যাইয়া ২নং স্বাক্ষীর ছেলে ১নং স্বাক্ষীর খোঁজ নিতে চাইলে ১নং আসামী জানায় যে, ১নং স্বাক্ষীকে নিতে হইলে
২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা মুক্তিপন দিতে হইবে। মুক্তিপন না দিলে ২৬/১২/২০১৮ইং তারিখে রাত্রে ক্রস ফায়ার দিয়া মারিয়া লাশ গুম করিয়া ফেলিবে মর্মে হুমকি দেয়। মুক্তিপনের ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা দিলে
থানায় আনিয়া ১নং স্বাক্ষীকে ছাড়িয়া দিবে মর্মে আমি ও ২নং স্বাক্ষীকে অবগত করে। পরবর্তীতে ২নং স্বাক্ষী বহু কষ্টে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা জোগাড় করিলে আমি ও ২নং স্বাক্ষী সেনবাগ থানায় যাইয়া ১নং আসামীর
হাতে দিলে ১ম ঘটনার পরের দিন সেনবাগ থানায় আনিয়া বিকাল ০৩:০০ টার দিকে ১নং স্বাক্ষীকে ছাড়িয়া দেয়। ২য় ঘটনার তারিখ, সময় ও স্থানে ১নং আসামীর নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামীগণ ও অজ্ঞাত নামা আসামীগণ
৯টি নম্বর বিহীন মাইক্রোবাস যোগে ৩নং স্বাক্ষীর বাড়ীর দরজায় আসিয়া বাড়ীর গেইট ভাঙ্গিয়া বাড়ীর ভিতরে ঢুকিয়া ৩নং স্বাক্ষীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ করিতে করিতে ৩নং স্বাক্ষীর বসত ঘরের সামনে আসে। তখন
আমি ও ৪-৭নং স্বাক্ষীগণ নির্বাচনের বিষয় নিয়া ৩নং স্বাক্ষীর সহিত আলাপ আলোচনা অবস্থায় ছিলাম। সকল আসামীগণ ৩নং স্বাক্ষীর বসত ঘরের দরজায় আসিয়া আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়িয়া ও বোমা ফাটাইয়া ৩নং
স্বাক্ষীর বসত বাড়ীতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করিয়া ৩নং স্বাক্ষীর বসত ঘরের দরজা ভাঙ্গিয়া অন্যায় অনধিকারে বসত ঘরে ঢুকিয়া ৩নং স্বাক্ষীর ঘরে থাকা মূল্যবান সামগ্রী ভাংচুর করিয়া প্রায় ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকার
ক্ষতি সাধন করে। তখন আমি সহ ৩-৭নং স্বাক্ষীগণ ভয়ে এদিক সেদিক ছুটা-ছুটি করিতে থাকি। এক পর্যায়ে ১নং আসামী ৩নং স্বাক্ষীর মাথায় পিস্তল ঠেকাইয়া ১নং আসামী বলে তুই তোর সকল নেতাকর্মী, তোর এজেন্ট
সহ সকলকে জানাইয়া দিবি যে, আগামী দিন ৩০/১২/২০১৮ ইং তারিখে ভোট কেন্দ্রে যেন না যায়। তুই ঘর থেকে বের হইতে পারবি না। ভোট কেন্দ্রে যাইতে পারবি না। সকল আসামীগণ আমি সহ ৩-৭নং স্বাক্ষীদেরকে
কিল ঘুষি লাথি মারিয়া এবং পিটাইয়া আমাদেরকে মারাত্মক জখম করে আমি ও ৩-৭নং স্বাক্ষীগণকে ২- ১৮নং আসামীগণ বলে তোদের ছবি তুলে রাখলাম। তোরা ভোট কেন্দ্রে গেলে তোদেরকে মারিয়া লাশ গুম করিয়া
ফেলিবে মর্মে হুমকি দেয়। আসামীগণের এহেন কর্মকান্ডে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ২-১৮নং আসামীগণের মধ্যে ২/৬/৮/৯/১১নং আসামীর গায়ে পুলিশের পোশাক, ৩/৪/৫/৭/১০/১২/১৪/১৫নং আসামীর গায়ে র্যাবের
পোশাক, ১৩/১৬/১৭/১৮নং আসামীর গায়ে ডি.বি পুলিশের পোশাক পড়া ছিল। উক্ত ২-১৮নং আসামীগণ একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ায় আমি ও ৩-৭নং স্বাক্ষীগণ চিনিতে পারিয়াছি। ২৪/২৫ জন অচেনা
সন্ত্রাসীদের মুখে মুখোশ পরা থাকায় তাদেরকে চিনিতে পারি নাই। ২য় ঘটনার সময় আসামীগণের এহেন কর্মকান্ডে শত শত মানুষ দেখিয়াছে। কিন্তু প্রত্যেকটির হাতে স্বয়ং সক্রীয় আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় কেহ তাদের বিরুদ্ধে
মুখ খুলতে সাহস পায় নাই। আসামীগণ চলিয়া যাওয়ার পর আমরা স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করি। তৎকালীন সময়ে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় ১নং আসামী সহ অন্যান্য আসামীদের হুমকির কারণে আমরা জীবন বাঁচানোর জন্য মামলা আনয়ন করিতে পারি নাই। তৎকারণে অত্র মামলা আনয়ন করিতে কিছুটা বিলম্ব হইল।