মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-সুনামগঞ্জে করোনাকে জয় করেছে এক মা। দীর্ঘ ১৫দিন পর আজ শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্ভর) রাত সাড়ে ৮টায় ফিরে পেয়েছে তার দুই জমজ সন্তানকে।সন্তানদের কোলে নিয়ে মা আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন।
দুই জমজ সন্তানের মায়ের নাম- সৈয়দা রিনা বেগম। তিনি জেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক সুফি মিয়ার স্ত্রী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গত ১৫ই আগষ্ট সিলেটের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে ২ জমজ ছেলে সন্তানের মা হন সৈয়দা রিনা বেগম। এক সাথে ২ ছেলে সন্তান পেয়ে নির্মাণ শ্রমিক সুফি মিয়া ও তার পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনরা খুবই আনন্দিত।
কিন্তু তাদের সেই আনন্দ দুঃখে পরিণত করে দিল মহামারী করোনা। জমজ সন্তানদের নিয়ে সিলেট থেকে নিজ বসতবাড়ি জগন্নাথপুরে আসার পর মা সৈয়দা রিনা বেগমের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর গত ২৪ আগষ্ট নমুনা পরিক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়।
নবজাতক জমজ ২শিশু সন্তান নিয়ে মহাবিপদে পড়ে যায় নির্মাণ শ্রমিক সুফি মিয়া। কারণ স্ত্রীর মহামারী করোনা হওয়ার কারণে জমজ ২ শিশুকে মায়ের দুধ পান করাতে পারবে না।
এমতাবস্থায় একদিকে দুধের জন্য কাঁদছে জমজ ২শিশু অন্যদিকে মা সৈয়দা রিনা বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে ২৫ আগষ্ট আবার সিলেট নিয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ওই সময় এলাকার অনেকেই জমজ ২শিশুর দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল।
কিন্তু তাতে রাজি হননি শ্রমিক সুফি মিয়া। অবশেষে রিনা বেগমের বড় দুই বোন তাদের বুকের দুধ পান করিয়ে জমজ শিশুদের প্রাণ রক্ষা করেন। দীঘ ১৫দিন চিকিৎসা শেষে করোনাকে জয় করে আজ শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্ভর) রাত সাড়ে ৮টায় সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন সৈয়দা রিনা বেগম।
এবং জমজ ২ শিশু সন্তানকে নিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় সৈয়দা রিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন- মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আমি বেঁচে এসেছি শুধু আমার ২ সন্তানের জন্য। আল্লাহ আমার সন্তান ও আমাকে দয়া করেছেন, আমাদের প্রাণে রক্ষা করেছেন। আমি খুবই আনন্দিত।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মধু সূধন সাংবাদিকদের বলেন- জমজ ২ সন্তানের মা করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানতে পেরেছি।