মোজাম্মেল আলম, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, মধ্যনগর, বিশ^ম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পথে সরকারে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা কয়লা, পাথর, শাড়ি-কাপড়, পান-সুপারী, চিনি, কাঠ, মদ-গাঁজা ও ইয়াবাসহ অস্ত্র পাচাঁর করছে বলে খবর
পাওয়া গেছে। পুলিশ ২দিনে পৃথক অভিযান চালিয়ে জেলার শান্তিগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলা থেকে ১০ কেজি গাঁজা, ২টি পিকআপ ভ্যান ও ৩০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যের ১৬৯১ পিছ ভারতীয় শাড়িসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত চোরাকারবারীরা হল- টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর
উপজেলার বড় চওনা গ্রামের শামসুল হকের ছেলে জাহিদ মিয়া (২৩), একই গ্রামের সুরজত আলীর ছেলে সাব্বির আহমেদ (১৮), আজহার মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া (১৭), একই উপজেলার হামিদপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নাজমুল হক (২২) ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা গ্রামের
মৃত কালা মিয়ার ছেলে ছালিম মিয়া (৪০)। তাদের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক মামলা দায়ের করে সবাইকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- গতকাল বুধবার (১৫ মার্চ) রাত ১২টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট বড় মসজিদের সামনে
অবস্থিত সমসার হাওর পাড়ের নালা দিয়ে ৩টি বারকি নৌকা বোঝাই করে ভারত থেকে পাচাঁরকৃত ২৫ মেঃটন চুরাই কয়লা ও বিপুল পরিমান মদ ও গাঁজা প্লাষ্টিকের বস্তা ভর্তি করে পাশর্^বতী বালিয়াঘাট সীমান্তের বোরাঘাট গ্রাম সংলগ্ন পাটলাই নদীতে নিয়ে বড় ইঞ্জিনের নৌকা বোঝাই করে
একাধিক মামলার আসামী চোরাকারবারী খোকন মিয়া ও তার বাহিনী। কিন্তু তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। এছাড়াও চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের ১শ গজ দূরে অবস্থিত মঙ্গল মিয়া, ডালিম মিয়া, বাবুল মিয়া ও ফরিদ মিয়ার বসতবাড়িসহ পাশর্^বর্তী জঙ্গলবাড়ি, বাঁশতলা ও লালঘাট
এলাকার বিভিন্ন বাড়িঘরের ভিতরে শতশত মেঃটন অবৈধ চোরাই কয়লা মজুত করেছে বিশিষ্ট চোরাকারবারী রফ মিয়া, লেংড়া জামাল, রিপন মিয়াগং। একই ভাবে প্রতিদিন রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লাউড়গড় সীমান্ত দিয়ে কয়লা, পাথর, কাঠ, মদ-গাঁজা, বিড়ি ও বালিয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে একাধিক
মামলার আসামী সোর্স ইয়াবা কালাম মিয়া, রতন মহলদার, মানিক মিয়া ও জালাল মিয়াগং কয়লা পাচাঁরের পাশাপাশি কয়লার বস্তার ভিতরে করে মদ-গাঁজা ও ইয়াবা পাচাঁর করছে। তারপরও চিহ্নিত চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করা হয়না। অথচ গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টায় জেলার
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের মনবেগ এলাকায় সুনামঞ্জ-সিলেট আ লিক মহাসড়কে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজিসহ চালক ছালিম মিয়াকে গ্রেফতার করে। ওই সময় তার সাথে থাকা একজন পালিয়ে যায়। পরে চালকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সিএনজি গাড়ীর
সীটের নীচ থেকে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এঘটনার প্রেক্ষিতে এসআই তপন কান্তি দাস বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে গত সোমবার (১৩ মার্চ) ভোর ৫টায় জেলার ধর্মপাশা উপজেলা সদরের শামীম আহম্মেদ বিলকিসের
বাড়ির সামনের রাস্তায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২টি পিকআপ ভ্যান আটক করে। এবং তার ভিতর থেকে ৩০ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মূল্যের ১৬৯১ পিছ ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার করাসহ চোরাকারবারী জাহিদ মিয়া, সাব্বির আহমেদ, রায়হান মিয়া, নাজমুল হককে
হাতেনাতে গ্রেফতার করে। ওই সময় মুরাদ চৌধুরী ও শাহালম নামের দুই চোরাকারবারী দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই চোরাকারবারীরা মধ্যনগর ও তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই পথে অবৈধ ভাবে শাড়ি-কাপড় ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন মালামাল ভারত থেকে পাচাঁর করে
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠায়। এঘটনার প্রেক্ষিতে ৬জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শান্তিগঞ্জ থানার ওসি খালেদ চৌধুরী ও ধর্মপাশা থানার ওসি
মিজানুর রহমান পৃথক ঘটনায় অবৈধ মালামাল ও গাড়ীসহ ৫জনের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান- মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত আছে।