কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে তীব্র দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির প্রার্থনায় সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের
মাঝবিল ঈদাগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার (বৃষ্টির জন্য যে নামাজ পড়া হয়) নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা হয়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একই স্থানে নামাজ শেষে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে আয়োজন শেষ করা হবে বলে জানান মুসল্লিরা।
এলাকাবাসী জানান, নামাজে অংশ নিতে সকালে মাইকিং করা হয়। এরপর শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ নামাজের জন্য মাঠে হাজির হন। নামাজের ইমাম প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে এই বিশেষ নামাজের নিয়মকানুন জানিয়ে দেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে দুই হাত তুলে প্রচুর গরম, তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন মুসুল্লিরা। নামাজে অংশ নেয়া জিয়াউর রহমান, আবু সাঈদ, আবুল হোসেন, সাইফুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, বৃষ্টিবাদল নেই। খুব তাপ। কলে পানি উঠছে না। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে।
তাই বৃষ্টি চেয়ে নামাজের মাধ্যমে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে সবাই দোয়া করেছেন। মশিউর রহমান নামের একজন বলেন, দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি গাছপালাসহ সবাই কষ্টে আছে। এ কারণে বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়েছি।
চিলমারী রাজার ভিটা ইসলিয়াম ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মিনহাজুল ইসলাম নামাজে ইমামতি করেন। তিনি বলেন, কোরআন-হাসিদের আলোকে যতটুকু জানা গেছে, খরা, অনাবৃষ্টি, ভূমিকম্প, প্লাবন, মহামারি প্রভৃতির মূল কারণ হলো মানুষের পাপ ও গুনাহ’ ফল।
বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। সে জন্য তারা মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে পাপের জন্য তওবা করে এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছেন। মূলত এটি সুন্নতি আমল।
তিনি আরও জানান, ইসতিসকার নামাজ তিন দিন আদায় করা সুন্নত। সেজন্য আগামী বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার একই স্থানে তৃতীয় দিনের মতো নামাজ শেষে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে আয়োজন শেষ করা হবে। জেলার রাজারহাট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল মাসের শেষের দিকে তাপত্রামা আরও
বৃদ্ধি পেতে পারে। কুড়িগ্রাম জেলায় আজ ৩৭.০৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ মাসে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। এদিকে এপ্রিল মাস জুড়ে উত্তপ্ত আবহাওয়ার কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।