কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে অভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুলসহ ছাত্রদল, যুবদল ও তাঁতী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন অপর এক বিএনপি নেতা। দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতার ভাইয়ের উপর হামলা ও মামলার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা ও দলীয় নেতা-কর্মী সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলা বিএনপি’র কার্যালয়ে অভ্যন্তরীন কোন্দলের কারনে বিবাদমান উভয় পক্ষ মিমাংসায় বসেন। সেখানে আলোচনা চলাকালীন সময়ে দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের ছোট ভাই আনারুল ইসলাম (৩৪) কে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন।
এতে আনারুল ইসলামের বুকের বামপাশে গুরুত্বর জখম হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হামলার কারনে মিমাংসার আলোচনা পন্ড হয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের পক্ষীয় লোকজনের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উভয় পক্ষ মারমুখি অবস্থান গ্রহন করায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঘটনার পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুলকে প্রধান আসামী করে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদল, যুবদল ও তাঁতী দলের ১২ নেতা-কর্মীসহ অজ্ঞাত ২৫ জনের নামে উলিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১৬)। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম জানান,
আমার ব্যবসায়ীক পাটনারের কাছে পার্টির সাধারণ সম্পাদকের লোক হিসেবে পরিচিত জিয়াদুল ইসলাম চাঁদা দাবী করলে আমি এর প্রতিবাদ করি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার সাথে হাতাহাতির ঘটনায় ঘটে। পরে বিষয়টি নিয়ে পাটি অফিসে মিমাংসায় বসলে আলোচনা চলাকালীন সময়ে অতর্কিতভাবে আমার ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুল বলেন, উপজেলার একটি বালুর পয়েন্টে গিয়ে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে আমিনুল ইসলামের দুই ভাই চাঁদা দাবী করেন। সেখানে উপজেলা তাঁতী দলের সদস্য সচিব জিয়াদুল ইসলাম প্রতিবাদ করলে তাকে ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বাজারে ডেকে এনে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন রাতে পাটি অফিসে উভয় পক্ষকে নিয়ে নেতৃবৃন্দ মিমাংসায় বসেন।
সেখানে দীর্ঘ আলোচনার পর মিটিং পন্ড হয়ে গেলে আমিনুল ইসলামের ভাইয়ের উপর হামলার ঘটনা ঘটে বলে শুনেছি। তিনি দাবী করেন, সেইদিন তার মেয়ে অসুস্থ থাকায় চিকিৎসাজনিত কারনে তিনি মিটিং এ উপস্থিত থাকতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, পূর্ব বিরোধের কারনে আমাকে মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত করলে সত্য বেড়িয়ে আসবে। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক মামলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।