ইসরাইলে একটি ধর্মীয় উৎসবে হুড়োহুড়ির সময় পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৬৫ জন। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দেশটির জাতীয় জরুরি বিভাগ ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) দুর্ঘটনাটির কথা নিশ্চিত করেছেন। খবর বিবিসির।
ইসরাইলের সংবাদ মাধ্যম হারেৎজের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেশটির উত্তরাঞ্চলে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের একটি অনুষ্ঠানে ব্যাপক গণজমায়েতের পর হুড়োহুড়ির মধ্যে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
হারেৎজ জানিয়েছে, লক্ষাধিক কট্টর ইহুদি ধর্মাবলম্বী ইসরাইলি নাগরিক ‘লাগ বাওমের’ নামক ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় সাফেদ শহরের মাউন্ট মেরন পর্বতের কাছে একত্রিত হয়। এই এলাকাটিকে ইসরাইলের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একপর্যায়ে তাদের হুড়োহুড়িতে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলের চিকিৎসক দলের উদ্ধৃতি দিয়ে হারেজ আরো জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ২৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হতাহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে ৬টি অ্যাম্বুলেন্স হেলিকপ্টার পাঠিয়েছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। একইসঙ্গে বহু সংখ্যক চিকিৎসককেও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের কর্মী মেগান ডেভিডের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, এই দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৬৫ জন।
এদিকে হতাহতের এই ঘটনায় শোক জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দুর্ঘটনার পর টুইটারে দেয়া এক বার্তায় এটিকে ‘মর্মান্তিক’ উল্লেখ করে আহতদের আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, হিব্রু ক্যালেন্ডারের দ্বিতীয় মাস ‘ইয়্যার’-এর ১৮ তারিখ থেকে গণনা করে ৩৩তম দিনে ইসরায়েলের মেরন শহরে ‘ল্যাগ বাওমার’ উৎসব পালিত হয়। তীর্থস্থানে পৌঁছে আগুন জ্বালিয়ে, নৃত্য করে এবং প্রার্থনার মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালন করেন ইহুদীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার লাখখানেক মানুষ মেরনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। যাত্রাপথে সেখানে ব্যাপক ভিড় হয়। মানুষের চাপে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। এতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লোকজন ভিড় ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় যেতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর পর এটিই ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় কোনো উৎসব পালনের ঘটনা। টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, এক লাখের মতো মানুষ বৃহস্পতিবার রাতেই জড়ো হয়। শুক্রবার আরো মানুষের সেখানে যাওয়ার কথা রয়েছে। গত বছর করোনার কারণে এ উৎসব স্থগিত করা হয়। দেশজুড়ে দ্রুতগতিতে টিকাদান সম্পন্ন করার পর এবার অনুমতি দেয়া হয়।