করোনা সংকটে দীর্ঘদিন বাস বন্ধ থাকায় জীবন বাঁচানোর তাগিদে সুদের উপরে টাকা নিয়েছিলেন এক বাস শ্রমিক। পাওনাদারের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত বিষ পানে আত্মহাত্যা চেষ্টার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মূমুর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্বজনরা।
ঘটনাটি ঘটেছে (২১ মে) শুক্রবার রাতে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামে। ওই বাস শ্রমিক সমেস উদ্দিন (৩৮) উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাঘমারা গ্রামের সোনাউল্লাহ ছেলে।
বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টায় আহত ওই বাস শ্রমিকের স্ত্রী রোজিনা খাতুন (২৯) জানান, বিগত ১৫ বছর থেকে তার স্বামী বাস শ্রমিকের কাজ করে আসছেন।
করোনাকালীন সময়ে কয়েক মাস থেকে বাস বন্ধ থাকায় বাঁচার তাগিদে তার স্বামী একই ইউনিয়নের পদ্মারচর গ্রামের আলী আকবরের ছেলে মোকছেদুলের (৩৩) নিকট ৬০ হাজার, বাদশা মিয়ার ছেলে মঞ্জু মিয়ার (২২) নিকট ৩০ হাজার ও পদ্মারচরের জালালের নিকট ১০ হাজার টাকা চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সাংসার চালান।
এখন পর্যন্ত বাস চালু না হওয়ায় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না তিনি। বুধবার সকালে এসে শুক্রবার রাতের মধ্যে টাকা দিতে হবে এমন সময় বেধে দেন তারা।
ওই দিন টাকা না দিলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। এই ভয়ে শুক্রবার রাতে সবার অগোচরে বিষপানে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। তার কাৎরানোর শব্দ শুনে তাকে উদ্ধর করে দ্রুত রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রৌমারী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জমিতে প্রয়োগ করা বিষ অতি মাত্রায় পান করায় তিনি এখনও শংঙ্কা মুক্ত নন। ৭২ ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাবে না।
রৌমারী উপজেলার বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান ছক্কু জানান, সমেস উদ্দিন আমাদের উপজেলা কমিটির এক সক্রিয় সদস্য।
সে প্রতিদিন ১৪/১৫টি বাস পরিষ্কার করে প্রায় ১থেকে ২ হাজার টাকা আয় করেন। যা দিয়ে সংসার চলে। দীর্ঘ দিন থেকে বাস না চলায় তার রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। শুনেছি ঋণের টাকা দিতে না পারায় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।
এব্যাপারে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।