মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
spot_img
Homeসাহিত্যভারত শাসন করা আফ্রিকান রাজা মালিক আনদিল

ভারত শাসন করা আফ্রিকান রাজা মালিক আনদিল

জানা যায়, প্রাচীন গ্রীস বা রোমের হাজার বছর আগে কালো চামড়ার কর্মঠ দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর নারী-পুরুষরা এই অঞ্চলে শক্তিশালী সভ্যতার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন সিন্ধু উপত্যকায়।

কথিত আছে, দ্রাবিড়দের পূর্বপুরুষ ছিলেন কালো আফ্রিকানরাই। পরবর্তীকালে তাদের সঙ্গে অস্ট্রেলয়েড জাতির সংমিশ্রণে দ্রাবিড় জাতি গড়ে ওঠে। তাদের সংস্কৃতি এবং ধর্ম বিশ্বাসে ছিল এ ইতিহাসের সুস্পষ্ট প্রতিফলন।

আফ্রিকা কেন্দ্রিক সভ্যতা বিকাশের সমর্থক নৃতাত্ত্বিক ড. ক্লাইড উইন্টারস এ বিষয়ে লিখেছেন, ইথিওপীয়দের সঙ্গে (প্রাচীন) ভারতীয়দের খুব আত্মিক সম্পর্ক ছিল।

অভিজাত আফ্রিকান সিদিদের সাথে আর্য বংশদ্ভুত সাদা চামড়ার মানুষের ভৃত্যসদৃশ অবস্থানের কৌতুকপূর্ণ তুলনা। ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলা জয় করে হাবশি বংশ প্রতিষ্ঠাকারী শাহজাদা খোজা বারবাক। তার সম্পর্কে ইতিহাসে তেমন তথ্য পাওয়া যায়না। তবে, তিনি যে সিদি আফ্রিকীয় ছিলেন এবং তার পূর্বপুরুষ ইথিওপীয়, তা নিশ্চিত।

সিদি হচ্ছে সিদ্ধি শব্দের প্রচলিত অপভ্রংশ। সোয়াহিলি ভাষার মূল শব্দটি হলো শিদি বা হাবশি। আজো এদের বংশধরেরা ভারত ও পাকিস্তানের নানা অঞ্চলে বসবাস করেন। পূর্ব আফ্রিকার বান্টু জনগোষ্ঠীরাই হাবশিদের পূর্বপুরুষ ছিলেন বলে অনুমান করা হয়।

শাহজাদা খোজা বারবাক ক্ষমতায় আসীন হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তার বিশ্বস্ত এক আমাত্যের হাতে নিহত হন। তখন ক্ষমতায় আসীন হন মালিক আনদিল খান সুলতান।

সিংহাসনে বসার পর তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন সাইফ উদ্দিন আবুল মুজাফফর ফিরোজ শাহ। তিনি একজন অত্যন্ত জ্ঞানী ও সুযোগ্য রাজা ছিলেন। তার শাসনামলে বাংলায় সমৃদ্ধি এসেছিল।

ফিরোজ শাহ ১৪৮৭ থেকে ১৪৯০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার মসনদে আসীন ছিলেন। তার আমলে জারি করা মুদ্রার সুবাদেই শাসনকাল সম্পর্কে নিশ্চিত জানা গেছে। তিনি নিজ প্রজাদের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা তৈরি করেন। একইসঙ্গে ছিলেন খুবই দয়ালু ও প্রজাবৎসল।

বিবলিওথিকা ইন্ডিয়া গ্রন্থে তার প্রচুর ধনদৌলত দান-ধ্যানের উল্লেখ রয়েছে। গরিবদের জন্য তার সহমর্মিতা ছিল অতুলনীয়।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ