বশির আলম, টঙ্গীর সুনাম ধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এণ্ড কলেজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস মহান ২১ ফেব্র“য়ারি পালিত হয়েছে ।
সকালে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অবিভাবকদের সাথে নিয়ে প্রভাত ফেরি শেষে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময়জাতীয় সংগীতপতাকা উত্তোলন ভাষা আন্দোলনে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ ওয়াদুদুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন এণ্ড কলেজ পরিচালনার কমিটির ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. আজমত ও
উল্লাহ খান, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ ওসমান আলী, বিদ্যালয়ের প্রভাতি শাখার সহকারী প্রধান জাহানারা বেগম,
দিবা শাখার সহকারী প্রধান মজিবুর রহমান, ভোকেশনাল ইনচার্জ হাবিববুর রহমান, সিনিয়র শিক্ষক সুর“জ্জামান সরকার, আবু বক্কর সিদ্দিক, চৌধুরী আশরাফ হোসেন, গোলাজার হোসেন, আশরাফ আলী, রতন কুমার ঘোষ, প্রমুখ।
এসময় বক্তারা ভাষার ইতিহাস নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। মায়ের ভাষা বাংলা –আমরা সবাই কম বেশী জানি ইতিহাস।
তারপরও একুশের সেইদিনটির প্রেক্ষাপটটি আরো একবার পড়ি, জানি। ভাষা আন্দোলন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন, যা ছিল বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান গঠিত হয়, কিন্তু পাকিস্তানের দুটি অংশ পূর্ব পাকিস্তান (পূর্ব বাংলা হিসেবেও পরিচিত) ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সাংস্কৃতিক, ভৌগলিক ও ভাষাগত দিক থেকে পার্থক্য ছিল প্রচুর।
১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার ঘোষণা করে উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, যা পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাভাষী জনগণের মধ্যে তুমুল ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাভাষী মানুষ (যারা সংখ্যার বিচারে সমগ্র পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল) এ সিদ্ধান্তকে মোটেই মেনে নিতে চায়নি। পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাভাষার সম-মর্যাদার দাবীতে শুরু হয় আন্দোলন।
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর খাজা নাজিমুদ্দিন জানান যে পাকিস্তান সরকারের সিদ্ধান্তই মেনে নেওয়া হবে।
এই ঘোষণার ফলে আন্দোলন আরো জোরদার হয়ে ওঠে। পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে মিটিং-মিছিল ইত্যাদি বেআইনি ঘোষণা করে।১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি (৮ই ফাল্গুন ১৩৫৮) এই আদেশ
অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুসংখ্যক ছাত্র ও কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে মিছিল শুরু করেন। মিছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ মিছিলের উপর গুলি চালায়।
গুলিতে নিহত হন সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেকে। এই ঘটনায় সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে ক্ষোভের আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার গণ
আন্দোলনের মুখে নতি স্বীকার করে এবং ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করে।