গৌতম সাহা: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর জমি দখলের অভিযোগ। উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের কাকরিয়া গ্রামের বিনোদ দাসের ছেলে সাধন দাস ও তার স্ত্রী গিতা রানি দাস দুজনেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। সাধন দাস ও গিতা রানি দাস দুজনেই জন্ম থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, তাদের ঘরে
চার রয়েছে ৪ কন্যাসন্তান। এদের মধ্যে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বাকি তিন মেয়ের মধ্যে মেজ মেয়ে পড়াশোনা করে। বাকি দুইজন খুব একটা পড়াশোনা করেনি,তারা দুজনেই তাদের বাবা মা’কে পরিবারের কাজে সাহায্য করেন। সাধন দাস ও তার স্ত্রী গিতা রানি দাস দুজনেইর রয়েছে প্রতিবন্ধী
ভাতার কার্ড। সরকারি ভাতা এবং প্রতিবন্ধী সাধন দাস নদীতে জাল দিয়ে মাছ শিকার করে কোন মতে পরিবার চালিয়ে আসছেন। সাধন দাস অভিযোগ করে বলেন, পার্শ্ববর্তী বাড়ির তপন কুমার দাস তার বাড়ির ৩ শতাংশ জায়গা দখল করে রেখেছেন। তপন কুমার দাস পেশায় একজন
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সাধন দাস বলেন, তাদের বাড়ির জমির পরিমাণ ১৯ শতাংশ, কিন্তু সরেজমিনে ৩ শতাংশ কম রয়েছে। ওই তিন শতাংশ জমি পার্শ্ববর্তী বাড়ির তপন কুমার দাস দখল করে রেখেছেন। তপন দাস তার জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছেন, এবং তার জায়গায় তপন
দাস ঘর তুলেছেন। ঘরের সাথেই আবার শৌচাগার তৈরি করেছেন। ঘর এবং শৌচাগার সরিয়ে নিতে বললে তপন দাস সরায়নি। সে বলে আমি কাগজে পাইলে সে ঘর সরিয়ে নিবে। তপন দাসের জায়গা সরকারি রাস্তায় পরছে কিন্তু সে তা না মেনে আমার জায়গা জোর করে দখল করে রেখেছে।
আমি ঘর তোলতে বাধা দিলে তপন দাস এলাকার সর্দার মাতব্বর দিয়ে আমাকে ভয় দেখায়। আমি গরীব মানুষ চারটা মেয়ে কোন ছেলে সন্তান নাই আমার। তপনের বাড়ির জায়গা কম থাকলে সেইটা কি আমার কাছ থেকে নিবে? এলাকার সর্দার মাতব্বরদের টাকা পয়সা খাওয়াইয়া রাখছে তার
পক্ষে কথা বলার জন্য। সর্দাররা তার পক্ষে কথা কয়। তপন দাস শিক্ষিত এবং পয়সা ওয়ালা তার পক্ষে সবাই কথা বলে। আমার পক্ষে কেউ কথা কয় না। সে চায় তারে জায়গা টা মাগনা দিয়ে আমি চইলা যাই। আমি অনেক অসহায় মেয়ে গুলো নিয়ে আমার চলতে অনেক কষ্ট, আমার কষ্ট সর্দাররা
বুঝে না। তারা চায় আমি তারারে জায়গা ছাইড়া দিয়া যাইগা। আমি গরীব মানুষ সরকারের কাছে আমার আবেদন আমার জায়গা টা আমাকে বুঝাইয়া দিতে। সাধনের স্ত্রী গিতা রানি দাস বলেন, আমি আমার স্বামী দুইজনই অন্ধ। আমরার ছেলে নাই চারটা মেয়ে আমরা গরীব মানুষ টাকা পয়সা
খরচ করতাম পারতাম না। সরকার আমরার জায়গা টা সঠিক ভাবে বুজাইয়া দিলে আমরা খুশি।পার্শ্ববর্তী বাড়ির সাধন দাসের এক ভাই নিরেস দাস বলেন, আমার অন্ধ ভাইয়ের জায়গা তপন মাষ্টার জোর করে দখল করে রাখছে। আমরা অনেক বার সর্দার মাতব্বর আইনা সালিশ কইরা
ভাইয়ের জায়গা বুঝাইয়া দিছে। কিন্তু তপন মাষ্টার মানে না। সে জোর করে বিল্ডিং করে রাখছে ভাইয়ের জায়গায়। স্থানীয় সর্দার অনিল দাস, পবিত্র দাস, প্রেমানন্দ দাস এদের সহায়তায় তপন মাষ্টার ঘর তুলে রাখছে। সরকারের কাছে একটাই কথা আমার গরীব ভাইয়ের জায়গাটা সঠিক ভাবে
উদ্ধার করে দেওয়া হউক। এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তপন কুমার দাস বলেন, আমি তাদের জায়গা দখল করি নাই। গ্রামের সর্দাররা সালিশ করে সাধন দাসের জায়গা বুঝাইয়া দিছে। কিন্তু সাধন দাস তা মানে না। আমি আরো দের হাত জায়গা
ছেড়ে দিয়ে ঘর তুলছি। যখন জিজ্ঞেস করা হয় যে সাধন দাসের অভিযোগ আপনি উনার তিন শতাংশ জায়গা দখল করে আছেন। উত্তরে সে বলে আমার ৯ শতাংশ জায়গা কম আমার জায়গা কই? তারজন্য প্রতিবন্ধীর জায়গা আপনি দখল করতে পারেন কি না? তখন সে এদিক সেদিক
বুঝানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তপন কুমার দাস বলেন তিনি এবার আইনের আশ্রয় নিয়েছেন।এই বিষয়ে অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভুইয়া বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই।
আমাকে কেউ বিষয় টা জানায়নি, যদি এমন হয় যে প্রতিবন্ধীর জায়গা কেউ দখল করছে। তাইলে তার বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।