ভোলার বোরহানউদ্দিনে আড়াই বছর আগে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার মামলায় হ্যাকার বাপন দাসকে (২৫) আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বরিশালের একটি আদালত। ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদে মুসল্লিরা বিক্ষোভ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়।
ঘটনার মূল হোতা বাপন দাসকে দোষী সাব্যস্ত করে রোববার পৃথক তিনটি ধারায় কারাদণ্ড দেন বরিশাল বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক। রায় ঘোষণার সময় বাপন দাস আদালতে উপস্থিত ছিল। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর ইসতাক আহমেদ রুবেল জানান, অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় আদালত বাপন দাসকে ৩৪ ধারায় আট বছর কারাদণ্ড ও তিন লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড; ২৮/১ ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড ও এক লাখ জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৩১/১ ধারায় চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। সব দণ্ড একসঙ্গে কার্যকর হওয়ায় বাপন দাসকে মোট আট বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বাপন দাস কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার চাচুয়া গ্রামের বিকাশ দাসের ছেলে। সে ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক যুবকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করে। ওই দিনই বিপ্লব তার ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার তথ্য জানিয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় একটি জিডি করেন। তবে ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বিপ্লব চন্দ্র, মো. ইমন ও মো. রাফসানকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে বোরহানউদ্দিন থানার পুলিশ। এদিকে, মুসল্লিদের বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিলে ২০ অক্টোবর পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন।
পরে তদন্তে গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সংশ্নিষ্টতার প্রমাণ পায়নি পুলিশ। ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি পুলিশ হ্যাকার বাপন দাসকে গ্রেপ্তার করে। বাপন আদালতে অপরাধ স্বীকার করে। পরে পুলিশ বিপ্লবসহ গ্রেপ্তার তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে বাপন দাসের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।