শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪
spot_img
Homeজাতীয়চিলমারীতে চরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে

চিলমারীতে চরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় চরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন চলে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদের পেটে। সীমানা প্রাচীর গ্রাস করা শুরু হয়েছে। অবশিষ্ট ভবনটি এখন গিলতে পারলেই

চিরতরে হারিয়ে যাবে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে নির্মিত এই এলাকার একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কর্মসূচি নেই মাঝ নদীতে কাজ করার। অনুরোধ করে ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল তাও এখন বালির বাঁধের মত স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। সেই সাথে ভেসে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের মনোরম পরিবেশে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ।

জানা গেছে, চিলমারী উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে চিলমারী সদর, অস্টমীরচর ও নয়ারহাট ইউনিয়ন মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। এই তিন দ্বীপ ইউনিয়নের অবস্থান ব্রহ্মপূত্র নদের বিভিন্ন চরে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হলো শ্যালোচালিত নৌকা।

বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৌরভ ও সানি জানায়, এই স্কুলঘর নদী গর্ভে গেলে আমাদের পড়াশুনা বিঘ্নিত হবে। কারণ এরপর এই স্কুল কোন চরে গিয়ে স্থাপন করা হবে আর আমরাই বা কোন চরে চলে যাবো তার কোন ঠিক ঠিকানা নেই। ফলে আমরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বৃষ্টি জানায়, আপনারা ভাঙন রোধে কিছু করতে পারবেন না। আমাদের পড়াশুনা বন্ধ হয়ে গেলে অভিভাবকরা বিয়ে দিয়ে দিবে। আমরা আরও পড়াশুনা করতে চাই। কিন্তু স্কুল নদীগর্ভে চলে গেলে আমাদের কী হবে?

নয়ারহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু হানিফা জানান, প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছি। ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা করা না হলে এটি আর রক্ষা করা যাবে না।

দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম মন্ডল জানান, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের অভ্যন্তরে অবস্থিত দ্বীপ ইউনিয়ন নয়ারচরের দক্ষিণ খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় ২০১৫ সালে।

এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। তিতি আরও বলেন, চরের অনেক অশিক্ষিত পরিবার তাদের সন্তানদের এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করান। স্বপ্ন দেখেন সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার।

কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙনের ফলে এবার প্রতিষ্ঠানের একমাত্র ভবনটিও হুমকির মুখে পড়েছে। বিভিন্নভাবে দেন-দরবার করেও এটি আর রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ লেখাপড়া এখন অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে।

বিষয়টি নিয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান জানান, প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কেউ অবগত করেননি। পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহযোগিতা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আমরা গত দুই বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করছি। এই গ্রামটিই ছিল এক সময়ে ব্রহ্মপূত্রের

মূল চ্যানেল। নদী আবার সাবেক অবস্থায় ফিরে আসার চেষ্টা করছে। এখন সরজমিনে দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

spot_img
এই বিভাগের অনান্য সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ